অক্সিজেন সিলিন্ডার কারসাজি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া ১৫ প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত

0
181

চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের এই তিন মাসে অক্সিজেন সিলিন্ডার কারসাজির মাধ্যমে শত কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। নতুন অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহে কৃত্রিম সংকটের পাশাপাশি পুরাতন সিলিন্ডার রিফিলের ক্ষেত্রে বিপুল এই অর্থ হাতানো হয়েছে। মিটারের দাম কয়েকগুণ বেশি রাখা এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিলিন্ডার সরবরাহেরও অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। এ ধরণের অনিয়ম এবং কারসাজির সাথে জড়িত ৫টি অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানসহ ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। চলতি বছরের জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসেও সাধারণ মানের একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার বিক্রি হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায়। কিন্তু মার্চের শুরুতে দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে শুরু হয় অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের কারসাজি। মে ও জুন মাসে এসে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। অক্সিজেন সিলিন্ডারের দাম পৌঁছায় ৩৫ হাজার টাকায়। প্রতিদিন নগরীতে এক হাজারের বেশি ছোট-বড় অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন হচ্ছে। সে অনুযায়ী সিলিন্ডার থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা করে বাড়তি লাভ করছে সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা।জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, নগরীতে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবসায় সম্পৃক্ত ৪০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০টি সরাসরি কারসাজির সাথে জড়িত। আর অনলাইন ভিত্তিক ৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জড়িত ৫টি।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, ১০টি প্রতিষ্ঠান অনিয়মের সাথে জড়িত। অনলাইনের ৫টি সংস্থাও অনিয়মের সাথে জড়িত।কয়েকদিন ধরে অক্সিজেন সিলিন্ডারের দোকানগুলোতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে অক্সিজেন ব্যবসায়ীদের অন্তত ৯ ধরণের অনিয়ম শনাক্ত করেছেন তারা। প্রতিটি অক্সিজেন মিটারে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বাড়তি রাখা হয়েছে। ১২০ টাকার রিফিলে রাখা হচ্ছে ৬শ’ টাকা।নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এই তালিকা দিয়েছি। পরবর্তী যে আইনি পদক্ষেপ আছে তা গ্রহণ করা হবে।অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের দাবি, মেডিকেল গ্রেডের অক্সিজেনের সংকটের কারণেই তারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেডের অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে বাধ্য হচ্ছেন।বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ মালিক শহীদুল ইসলাম বলেন, এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ মেডিকেল অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিলিন্ডারের চাহিদা দেখা যাচ্ছে।তবে করোনা আক্রান্তসহ শ্বাসকষ্টের রোগীদের শিল্প কারখানার অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রাখার পাশাপাশি অনিয়মের সাথে জড়িতদরর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ চিকিৎসকদের।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা অনুষদ ডীন ডা. সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, যদি কোনো কারণে সিলিন্ডারে সমস্যা থাকে তাহলে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে।নগরীতে চাহিদার এক চতুর্থাংশ অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করতে পারছে সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান লিন্ডে বাংলাদেশ। যার সংখ্যা প্রতিদিন মাত্র সাড়ে তিনশ।