আল-জাজিরার প্রতিবেদন নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা: আইএসপিআর

    0
    9

    কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত ‘অল দি প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে অসংখ্য ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাসদর দফতর। ইসরাইল থেকে স্পাইওয়্যার কেনার কথা বলা হলেও তা আদৌ সত্য নয় এবং সরঞ্জামটির কোথাও ইসরাইলের নাম লেখা নেই বলেও জানিয়েছে সেনাসদর।সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদফতরের প্রতিবাদলিপিতে এ কথা বলা হয়।এতে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনটি সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা সেনাবাহিনী প্রধানকে বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্বের দরবারে বিতর্কিত, অগ্রহণযোগ্য ও হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার সাথে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অন্যান্য অসত্য, বানোয়াট, মনগড়া, অনুমান নির্ভর ও অসমর্থিত তথ্য সংযুক্ত করে এই প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে।প্রতিবেদনটিতে প্রকাশিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ইসরাইল থেকে স্পাইওয়্যার কেনার বিষয়টিকে মিথ্যা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, পরিবেশিত তথ্যচিত্রে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ইসরাইল হতে স্পাইওয়্যার ক্রয় করা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সেনাবাহিনী প্রধানের ভাইকে সম্পৃক্ত করে কিছু মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউএনডিপিও কর্তৃক বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ‘সিগন্যাল ইউনিটের পরিবর্তে একটি সিগন্যাল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট’ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে মোতায়েন করতে সক্ষম কিনা জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি, উল্লেখিত ইউনিটের প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জামাদির তালিকা জাতিসংঘ থেকে প্রেরণ করা হয়। ঐ তালিকা অনুযায়ী উক্ত সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের জন্য সেসময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কিছু সরঞ্জামাদি মজুদ না থাকায় এবং সেগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করার প্রয়োজন হওয়ায়, বাংলাদেশ কর্তৃক সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের পরে প্রেরণ করা সম্ভব বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক জাতিসংঘকে অবহিত করা হয়।এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ কর্তৃক যথাযথ সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হাঙ্গেরি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে একটি প্যাসিভ সিগন্যাল ইন্টারসেপ্টর ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা ২০১৮ সালের  জুনে সম্পন্ন হয়। এই সরঞ্জামটি জাতিসংঘের চাহিদা মোতাবেক ক্রয় করা হলেও পরবর্তীতে জাতিসংঘ তানজানিয়ার একটি সিগন্যাল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে মোতায়েন করায় উক্ত সরঞ্জামটি অদ্যাবধি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছেই অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে এবং ভবিষ্যতে জাতিসংঘের চাহিদার প্রেক্ষিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রেরণ করার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কিন্তু, আল জাজিরার প্রতিবেদনে ওই সিগন্যাল সরঞ্জামটি ইসরাইলের তৈরি বলে যে তথ্য প্রচার করা হয় তা আদৌ সত্য নয় এবং সরঞ্জামটির কোথাও ইসরাইলের নাম লেখা নেই। সেনাবাহিনীতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় এবং অনেকগুলো পর্যায় অনুসরণ করে সরঞ্জামা ক্রয় করা হয়। এখানে দুর্নীতি করার কোন সুযোগ নেই বলেও ওই প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়।এছাড়া আরো জানানো হয়, এই সিগন্যাল সরঞ্জামটির ক্রয় প্রক্রিয়া বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এর দায়িত্ব গ্রহণের অনেক আগেই শুরু হয়েছে। অতএব উক্ত সিগন্যাল সরঞ্জামটির ক্রয় নিয়ে বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান বা হাঙ্গেরিতে বসবাসকারী তার ভাইয়ের কোন যোগসুত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা যে সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত, তাতে কোন সন্দেহ নেই। ফলে, এই তথ্যচিত্রটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো একটি স্বনামধন্য এবং সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং তার পরিবারের উপর কালিমা লেপনের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর মতো একটি স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণ করে দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা হিসেবেই মনে করে সেনা সেনাসদর দফতর।