রাজধানীসহ ঢাকা জেলার সরকারি ও বেসরকারি ৩৪টি হাসপাতালে করোনা রোগীদের ভর্তির জন্য এক হাজার ২১৩টি বেড খালি আছে। তার মধ্যে ৯১২টি সাধারণ বেড এবং আইসিইউ ও আইসিইউ সমতুল্য বেডের সংখ্যা ৩০১টি। এ তথ্য শুনে অনেক পাঠক ভিমড়ি খেতে পারেন। কিন্তু এমনই তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
করোনা সম্পর্কিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, বর্তমানে রাজধানীসহ ঢাকা জেলার ৩৪টি হাসপাতালে সর্বমোট সাধারণ বেড রয়েছে চার হাজার ৪৫৩টি। তন্মধ্যে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছে তিন হাজার ৫৪১ জন। এছাড়া ৫৩৯টি আইসিইউ ও ৬৭৮টি আইসিইউ সমতুল্য বেডসহ মোট আইসিইউ সমতুল্য বেডের সংখ্যা ১ হাজার ২১৭টি। তন্মধ্যে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৯১৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সম্প্রতি ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় হাসপাতালে রোগীদের ভিড় বাড়ছে। প্রায় প্রতিটি হাসপাতাল রোগীতে পরিপূর্ণ। বিশেষ করে আইসিইউতে ভর্তিযোগ্য রোগীকে শয্যার অভাবে ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় দ্রুত সাধারণ ও আইসিইউ সমতুল্য বেড বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলছে। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই সাধারণ বেড ও আইসিইউ সমতুল্য বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা জেলার ১৩টি সরকারি হাসপাতালের মধ্যে- রাজধানী ঢাকার ১০টি, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরে একটি করে মোট তিনটি হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে সাধারণ বেড সংখ্যা ২ হাজার ৮২৮টি।
এর মধ্যে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ১৬৯টি, ৫০০ শয্যার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৭৫টি, ২৫০ শয্যার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ১৪০টি, ফুলবাড়িয়ার সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ৯৪টি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট-২ এবং বার্ন ইউনিট ৭০৫টি, ৫০০ শয্যার মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ৩১০টি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ২৪০টি, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল ৪৮৫টি, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ১০টি, বিএসএমএমইউতে ১৮০টি, জিনজিরার ২০ শয্যার হাসপাতালে ২০টি, খানপুর ৩০০ শয্যার হাসপাতাল নারায়ণগঞ্জে ১০০টি এবং গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০টি বেড রয়েছে।
এসব হাসপাতালে ১৬২টি আইসিইউ এবং ৩৮৯টি আইসিইউ সমতুল্য বেডসহ মোট ৫৫১টি বেড রয়েছে। তন্মধ্যে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আইসিইউ ২৬টি ও আইসিইউ সমতুল্য বেড ৩৯টিসহ ৬৫টি, ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ ১০টি ও আইসিইউ সমতুল্য ৪৭টিসহ মোট ৫৭টি, ২৫০ শয্যার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে আইসিইউ ১৬টি এবং আইসিইউ সমতুল্য বেড ৩০টিসহ মোট ৪৬টি, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, ফুলবাড়িয়ায় আইসিইউ ৬টি এবং আইসিইউ সমতুল্য বেড ১৬টিসহ মোট ২২টি।
এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট-২ এবং বার্ন ইউনিটে ২০টি আইসিইউ ও আইসিইউ সমতুল্য ৯৫টিসহ মোট ১১৫টি, ৫০০ শয্যার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১৯টি আইসিইউ এবং আইসিইউ সমতুল্য ৩৭টিসহ মোট ৫৬টি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আইসিইউ ১০টি ও আইসিইউ সমতুল্য ১৫টিসহ মোট ২৫টি, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আইসিইউ ১৫টি এবং আইসিইউ সমতুল্য ২৬টিসহ মোট ৪১টি, বিএসএমএমইউতে ২০টি আইসিইউ এবং আইসিইউ সমতুল্য ৫০টিসহ মোট ৭০টি, জিনজিরা ২০ শয্যার হাসপাতালে আইসিইউ সমতুল্য বেড একটি, খানপুর ৩০০ শয্যার হাসপাতাল নারায়ণগঞ্জে আইসিইউ ১০টি ও আইসিইউ সমতুল্য বেড ১১টিসহ মোট ২১টি এবং গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ এবং আইসিইউ সমতুল্য ২২টিসহ মোট ৩২টি বেড রয়েছে।
এছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে এক হাজার ৭২৫টি সাধারণ বেডে এক হাজার ৩৬৫জন রোগী ভর্তি রয়েছে। বেসরকারি ২৪টি হাসপাতালে আইসিইউ রয়েছে ৩৭৭টি এবং আইসিইউ সমতুল্য বেড রয়েছে ২৮৯টি। সর্বমোট আইসিইউ সমতুল্য বেড সংখ্যা ৬৬৬টি। এর মধ্যে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৫৭৬ জন।