করোনা মহামারি নিয়ে এত ভয়াবহ পরিস্থিতি, প্রতীক্ষিত ভ্যাকসিন বিশ্বের সব দেশে পৌঁছে দিতে এত তোড়জোড়, সেখানে কিনা কালোবাজারেও বিক্রি হচ্ছে ভ্যাকসিন? সম্প্রতি করোনার ভ্যাকসিন ডার্ক ওয়েবে বিক্রি হচ্ছে-এমন তথ্য উঠে এসেছে সাইবার নিরাপত্তা ফার্ম চেক পয়েন্ট সফটওয়্যারের গবেষণায়।তারা বলছেন, ফার্মের তদন্ত অনুযায়ী, অ্যাস্ট্রাজেনেকা আর জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিন ১ হাজার ডলারেও বিক্রি হয়েছে কালোবাজারে। বাংলাদেশি টাকায় যার দাম ৮৫ হাজার ২৭ টাকা। ভ্যাকসিন সনদ বিক্রি হয়েছে অনেক, প্রতিটা ২শ’ ডলার করে। বাংলাদেশি টাকায় যা ১৭ হাজার টাকা।ডার্ক ওয়েব ইন্টারনেটের এমন একটা জায়গা, কোনো সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে যা খুঁজে পাওয়া যায় না। সাইবার অপরাধীরা এখানেই অবৈধ পণ্য কেনাবেচা করে। এ তালিকায় আছে ক্রেডিট কার্ড নম্বর, মাদক, অস্ত্রসহ করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত নানা পণ্য।চেক পয়েন্ট সফটওয়্যারের একজন মুখপাত্র সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানান, কেউ জানে না এ ভ্যাকসিন আসল না নকল। ডার্ক ওয়েবে পণ্যগুলো এমনভাবে বিক্রি হয়, যেন এগুলো শতভাগ আসল। ভ্যাকসিনের ছবি, প্যাকেজিংয়ের ছবি, আবার করোনা সনদের ছবি, ডার্ক ওয়েবে সব তথ্যই স্বচ্ছভাবে দেওয়া থাকে।রিপোর্টে বলা হয়েছে, ডার্ক ওয়েবে গেল তিন মাসে করোনার ভ্যাকসিনের বিজ্ঞাপন ছিল ৩শ’ শতাংশ।
এদিকে ভ্যাকসিন সনদ বা ভ্যাকসিন কার্ড যেগুলো তৈরি বা প্রিন্ট করা হচ্ছে, যারা কিনবেন, তারাই তাদের নামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিচ্ছেন, কবে নাগাদ তাদের ভ্যাকসিন সনদ লাগবে, সেটিও জানাচ্ছেন।চেক পয়েন্ট ফার্ম জানায়, যিনি ভ্যাকসিন কার্ড বিক্রি করছেন, মনে হচ্ছে তিনিও আসল কার্ডই দিচ্ছেন। ভ্যাকসিন কিংবা ভ্যাকসিন সনদ, নকল কিংবা আসল, সেটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি উদ্ধার করতে পারেনি। তবে এগুলো বিক্রি হচ্ছে, যারা বিমানে উঠবেন, সীমান্ত পাড়ি দেবেন, নতুন কোনো চাকরিতে যোগ দেবেন কিংবা ভ্যাকসিন সনদ জরুরি এমন কারো কাছেই।যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, নকল ভ্যাকসিন সনদের মধ্যেও ডান পাশে একটি ঈগলের ছবি দেওয়া থাকে। চেক পয়েন্ট বলছে, হাজার হাজার নকল ভ্যাকসিন সনদ এতদিনে অনেককে দেওয়া হয়েছে। আবার করোনা নেগেটিভ সনদও বিক্রি হচ্ছে ২৫ ডলারে। ভ্যাকসিন সনদ আর ডিজিটাল পাসপোর্ট কার্যক্রমে অনুপ্রবেশ থাকছেই।অনেকেই ভ্যাকসিনের আওতার বাইরে, অনেক দেশে ভ্যাকসিন পৌঁছায়নি, কিংবা টিকাদান চলছে ধীরগতিতে। এরমধ্যে মানুষ নকল ভ্যাকসিন পাসপোর্ট নিয়ে নিয়মনীতির বাইরে চলাফেরা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সরকারি এজেন্সিগুলো ভ্যাকসিনের সনদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিতে নিষেধ করছে, কারণ এ সনদের ছবি থেকে তৈরি হচ্ছে নকল সনদ।