গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, করোনা ভাইরাস শনাক্তের কিট বাজারে আসুক বা না আসুক গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র কাউকে ঘুষ দেবে না। উৎপাদিত কিট গ্রহণে ঔষুধ প্রশাসনের বিলম্ব করার সমালোচনা করে উৎপাদিত করোনা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি
রোববার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।কিট নিয়ে যাওয়া হলেও তা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর গ্রহণ করেনি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা ১২ তারিখে রক্তের নমুনা চেয়েছি কিন্তু পেয়েছি ২২ তারিখে। তাও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের হস্তক্ষেপের পর। এমনিতেই দেয়নি উনারা। আমার মতো লোক, একজনকে ২৫ বার ফোন করেছি। আমার ধৈর্যের অভাব নাই। সাড়া না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে যোগাযোগ করলাম। উনারা বলার পর আমরা রক্তের নমুনা পেলাম। এখন এটার গুরুত্বটা বুঝতে পারছেন না।জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রকদের প্রশংসা করেছি। এটাতে উনারা মনক্ষুণ্ন। আরে, ১২টার সময় যে মন্ত্রী ফোন ধরেন। সেখানে আমাদের যে অ্যাম্বাসেডর সাহেব…, বেইজিং আর মংডুর অনেক দূরত্ব, সেখানে তিনি জিনের লোক পাঠিয়ে মালটাকে প্লেনে উঠিয়ে দিয়ে…, এটাতে উনার লাভ হয়েছে? নাকি আমার লাভ হয়েছে? দেশবাসীর লাভ হয়েছে। এটার জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাবো না? আজকে এনবিআরের চেয়ারম্যান কেনো এটা করেছেন? আমি তাকে বলেছি, আগে এটা ছাড়েন দেনাপাওনা পরে দেইখেন। আমরা বলছি, আপনাদের ন্যায্য পাওনা সব পরিশোধ করে দেবো। কিন্তু ঘুষ দেবো না। গণস্বাস্থ্য ৪৮ বছরে কাউকে ঘুষ দেয়নি। এই প্রডাক্ট বাজারে আসুক বা না আসুক আমি ঘুষ দেইনি, দেবো না। দুর্নীতির অঙ্গিকার আমরা হইনি, হবো না। আন্দোলন করে যাবো। আপনাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে যাবো।গণস্বাস্থ্যের উৎপাদিত করোনা শনাক্তকরণ কিট হস্তান্তরে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছিল গণস্বাস্থ্যের কিট তৈরির খবর। তবে একে ঘিরে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু বিতর্কও।সংবাদ সম্মেলন করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, সকালে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে নমুনা নিয়ে গেলেও তা গ্রহণ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। অভিযোগ করেন, বেসরকারি স্বার্থ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে গণস্বাস্থ্যের কিট অনুমোদনকে বিলম্বিত করা হচ্ছে।গণস্বাস্থ্যের নগর হাসপাতালের ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘এটা নিতে ওষুধ প্রশাসন কেনো বিলম্ব করছে জানি না। একটার পর একটা অজুহাত তাদের।’অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে সিআরিও’র অনুরোধ জানানো হয়।তবে গণস্বাস্থ্যের অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অভিযোগ করেন, কিট অনুমোদনের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে না গণস্বাস্থ্য অধিদপ্তর।ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাউকে কীট নিতে অফার করেনি। অনেকক্ষণ বসেছিলেন কিন্তু কখনও বলেননি কীট নিয়ে এসেছেন। কীটটা আমাদের প্রয়োজন নেই। তাদের প্রয়োজন হলে তাদেরকে যোগাযোগ করতে হবে। আমরা কিট নেইনি, এটা আরেকটা মিথ্যা কথা।’গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।