||. প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম ||
বাংলাদেশ ২০১৪ সালে পার্মানেন্ট কোর্ট অব আর্বিট্রেশন (PCA) এর রায়ে ভারত-বাংলাদেশ মধ্যকার বঙ্গোপসাগরের বিতর্কিত অঞ্চলের বেশিরভাগ জিতে নিয়েছে। ঐ রায়ের ফলে মোট ২৫,৬০২ বর্গকিলোমিটারের বিতর্কিত এলাকার মধ্যে বাংলাদেশ ১৯,৪৬৭ বর্গকিলোমিটার পেয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের মোট সমুদ্র এলাকা দাঁড়িয়েছে ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলোমিটার, এবং দীর্ঘ উপকূল রেখা ৭১০ কিলোমিটার।
যদিও এটি পুরো বাংলাদেশের সমান নয়, তবে এই সমুদ্র অঞ্চল বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের তিন-চতুর্থাংশের সমান। এই বিশাল সামুদ্রিক অঞ্চলে এমন বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশ যে কোনো দক্ষিণ এশিয়ার দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ছাড়িয়ে যেতে পারে। যদি এই বিশাল সামুদ্রিক অঞ্চল বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করা হয়, তাহলে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক ভাগ্য নাটকীয়ভাবে বদলে যেতে পারে।
যদি বাংলাদেশ আরও আর্বিট্রেশন প্রক্রিয়া চালিয়ে যায়, তবে বাংলাদেশের সামুদ্রিক অঞ্চলের সীমা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণেই বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ। যখন একটি প্রো-ভারতীয় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়, তখন ভারত এই অঞ্চলে নিশ্চুপ থাকতে পারে না।
বঙ্গোপসাগরের সদ্ব্যবহার আগের সরকারগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারগুলোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ, এবং ভবিষ্যতে যারা বাংলাদেশ শাসন করার স্বপ্ন দেখছে তাদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ থাকবে।
বিএনপি যত বেশি আগাম নির্বাচনের দাবি করছে, বাংলাদেশি ভোটাররা তত বেশি জানতে আগ্রহী যে বিএনপির ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল কী হবে। বিএনপি কি আওয়ামী লীগ সরকারের ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করবে? বিএনপির কি কোনো ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল রয়েছে, নাকি তারা এটি প্রণয়ন করছে?
কিন্তু যেকোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণ, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, গবেষক এবং পেশাজীবীরা বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে একটি স্বচ্ছ ইন্দো-প্যাসিফিক নীতির প্রত্যাশা করছেন।
লেখক একজন ভূ-রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ।