নিউজ ডেস্ক :: বঙ্গবন্ধু গবেষণা কেন্দ্রের গভর্নিং বডির সভাপতি ও এনবিইআর’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান গরীববান্ধব অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজের ৬২তম জন্মদিন আজ। ১৯৫৯ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পিতা ছিলেন একজন শিল্পপতি এবং মাতা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন পরিচালক ডাক্তার হুসনে আরা। তারুণ্যের এই অভিভাবক দেশ-বিদেশে ব্যাংকিং ও বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃত।
জন্মদিনের অনুভূতি প্রকাশ করে অধ্যাপক পারভেজ সিএনএন বাংলাদেশকে বলেন, ৬২ পেরিয়ে ৬৩ বছরে পদার্পণ করলাম। নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি। তবে আগের মতো আনন্দ এখন আর নেই। এবারের জন্মদিন এক বিশেষ অবস্থার মধ্যদিয়ে অতিক্রম করছি। মহামারী করোনায় প্রতিনিয়ত পরিচিতদের মৃত্যুর খবর আমাকে বিষিয়ে তুলছে। সংকটময় এই অন্ধকার কাটিয়ে সোনালী সকালের প্রত্যাশায় উন্মুখ হয়ে বসে আছি।
অধ্যাপক পারভেজ বলেন, দেশের গরীব মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছি। এতে মানুষে যে ভালোবাসা পেয়েছি তা আমাকে অবিভূত করেছে। আগামী দিনগুলোতেও গণমানুষের জন্য কাজ করে যাবো। বিশেষ করে গরীববান্ধব অর্থনীতি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে আরও বেগবান করবো। এক সময় এ দেশের গরীব মানুষ জানতোই না যে দেশের ব্যাংকগুলোতে এবং জাতীয় বাজেটে তাদের হিস্যা রয়েছে। মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের অর্থনীতিবিদ হিসেবে আমি ধনীদের পাশাপাশি গরীবদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এখন সরকারও গরীববান্ধব অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছে। যার ফলে বর্তমান বাজেটেও এর প্রতিফলন ঘটেছে।
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক পারভেজ বলেন, আমরা এখন করোনা মহামারীর মাধ্যমিক স্তরে আছি। ইতোমধ্যে আমরা ডাক্তার, পুলিশ, সাংবাদিকসহ দেশের অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের হারিয়েছি। সংক্রমণ এবং মৃত্যুর এই তালিকা দিন দিন বেড়েই চলছে। সামনে আরও কঠিন মুহুর্ত অপেক্ষা করছে। তাই সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনে করে চলতে হবে। বাইরে বের হলে অবশ্যয় মাস্ক, পিপিইসহ অন্যান্য নিরাপত্তা সারঞ্জাম ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, জীবন বাঁচলেই জীবিকা। তাই নিজেকে নিরাপদ রাখতে ঘরে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।
করোনায় অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ইতোমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ছাঁটাই প্রক্রিয়া চলছে। এতে কর্ম হারিয়ে হতাশার মধ্যে বেকার জীবনযাপন করবে অনেক পেশাজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ। যা অর্থনীতির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক জীবনেও বিরুপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন অধ্যাপক পারভেজ। তাই সরাসরি চাকুরিচ্যূত না করে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পারস্পরিক বুঝাপড়ার মধ্যে এই সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানান গরীববান্ধব এই অর্থনীতিবিদ।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নীতি বিশ্লেষক এবং দেশের একজন নেতৃস্থানীয় গবেষক অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলাম পারভেজ বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮৮ সাল থেকে আন্ডারগ্র্যাড অ্যান্ড পোস্টগ্র্যাড পর্যায়ে ব্যবসায় ও যোগাযোগ শিক্ষা দিয়ে আসছেন। এছাড়াও তিনি বিজনেস স্টাডিজ সেন্টার ফর এআইএম এক্সপ্লোরার এর সম্পাদক, ভারতের মহামায়া কারিগরি ইউনিভার্সিটির ইউপি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডিরেক্টর, সেন্টার ফর গুড গভর্নেন্স, চট্টগ্রাম এবং ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনোমিকস রিসার্চ (এনবিইআর) এর চেয়ারম্যান।
অধ্যাপক পারভেজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজির বিজনেস ফ্যাকাল্টির সাবেক ভাইস-ডিন, চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির আইবিবিটির ভাইস রেক্টর, রুপালী ব্যাংকের পরিচালক, দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের পরিচালক ছিলেন।
অধ্যাপক পারভেজের একাডেমিক ও পেশাগত স্বার্থগুলিতে রাজনীতি, অর্থনীতি, যোগাযোগ এবং প্রশাসন অন্তর্ভুক্ত। দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন বিখ্যাত জার্নাল এবং সংবাদপত্রে তাঁর অনেক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
খ্যাতিমান এই গরীববান্ধব অর্থনীতিবিদের জন্মদিনে তাঁর হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী, ভক্তকুল ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের পাশাপাশি সিএনএন বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।