একটি চক্রে জেনেশুনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। আরেকটি চক্র নিজেদের স্বার্থে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এসব কনটেন্ট ছড়াচ্ছে। তবে, যেসব ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ থেকে এ ধরনের মিথ্যা তথ্য বা কনটেন্ট ছড়ানো হচ্ছে সেসব ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ অ্যাডমিনদের শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া এসব পোস্টে যারা লাইক ও শেয়ার দিচ্ছেন তাদেরও শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে।
বুধবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদরদপ্তরে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, এ ধরনের গুজব ছড়ানোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা যে শ্রেণির মানুষই হোক কেন আইনের আওতায় আনা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বলেছেন, কুমিল্লার ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাবও তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করেন তারা সবাই সচেতন থাকবেন। কেউ না জেনে, না বুঝে কোনো পোস্টে লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবেন। কারণ আপনার একটা শেয়ার অনেক ভুল তথ্য একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে যাবে।
তিনি বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে থেকে যেসব স্থানে বসে এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে সেসব স্থানও র্যাব শনাক্ত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি চক্র কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী ও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অপচেষ্টা করছে চক্রান্তকারীরা।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেল ব্যবহার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা, উসকানিমূলক ছবি প্রচার, ভিডিও, আপত্তিকর পোস্ট ও গুজবের মাধ্যমে বিভিন্ন অপপ্রচার ছড়িয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে স্বার্থান্বেষী মহল। এসব অভিযোগে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের অভিযানে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের এরই মধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।এর মধ্যে নোয়াখালীতে ইসকন মন্দিরে হামলার অভিযোগে ৬ জন, কুমিল্লা ও চাঁদপুরে গুজব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন উসকানিমূলক তথ্য প্রচারের অভিযোগে ৩ জন, রংপুরের পীরগঞ্জে মন্দির ও সনাতন ধর্মালম্বীদের ঘরবাড়িতে নাশকতার অভিযোগে ৮ জন, ফেনীতে উসকানিদাতা ও নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী একজনসহ ৪ জন ও চট্টগ্রামের বাশঁখালী থেকে নাশকতার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করেছে র্যাব।