দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সামান্য উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী মঙ্গল অথবা বুধবার বাংলাদেশে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন একজন আবহাওয়াবিদ।
শনিবার (১৬ মে) রাতে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে তিন (মঙ্গলবার, ১৯ মে) থেকে চারদিন (বুধবার, ২০ মে) সময় লাগবে।’
বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আঘাত করবে কিনা, সে বিষয়েও সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলছে না আবহাওয়া অধিদফতর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ রোববার (১৭ মে) বেলা ১১টার দিকে আবহাওয়াবিদ মো. আফতাব উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশে সরাসরি আঘাত হানবে, আমাদের বুলেটিনে ওইভাবে বলি নাই। এখনও ওইভাবে বলার সময় আসেনি। অনেক দূরে আছে।’
যদিও ইতোমধ্যে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে। এর অর্থ হলো সমুদ্রবন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত। সেই সঙ্গে বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনও আসেনি।
অন্যদিকে সকালে আবহাওয়া অধিদফতর তাদের বিশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে, দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি সবচেয়ে বেশি পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাছাকাছি অবস্থান করছে। তারপর ঘূর্ণিঝড়ের কাছাকাছি অবস্থান করা সমুদ্রবন্দর হচ্ছে বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দর। অর্থাৎ বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত করলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করার সম্ভাবনা বেশি।
আবহাওয়া অফিস বলেছে, আম্পান আজ সকাল ৬টায় (১৭ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে এবং সেই সাথে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
সকালের তথ্যানুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।