ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত : ন্যাপ

0
99

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের ফলে গত কয়েক বছর ধরে এই আইনে নাগরিকরা গ্রেফতার ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। ফলে গণমাধ্যম-কর্মীদের কাজের সুযোগ সংকুচিত করার লক্ষ্যে প্রণীত নিবর্তনমূলক এই আইনটি অবিলম্বে বাতিল করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

বুধবার (১৬ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া এ মন্তব্য করেন।

তারা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হচ্ছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি এই আইনটি তৈরি হয়েছে ভিন্নমত দমনের জন্য? প্রশ্ন উঠেছে, স্বাধীন সাংবাদিকতায় আইনটি কতটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে? এই আইনের খুব বেশি অপপ্রয়োগ চলছে। এই ধরনের আইনগুলো সাধারণত করাই হয় ক্ষমতাবানদের স্বার্থরক্ষার জন্য। করোনায় সময় এই আইনের অপব্যবহার অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের অধিকাংশই মনে করেন এই আইন করে স্বাধীন মত প্রকাশের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। এই আইনের ভয়ে মানুষ এখন সত্য কথা বলতে বা লিখতে ভয় পাচ্ছেন। যে আইন মানুষের সত্য কথা বলার পথ রুদ্ধ করে সেই আইন অবশ্যই জনস্বার্থবিরোধী। বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যখনই কোনো বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয় সেটা মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করার জন্যই করা হয়েছে।

তারা বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও দল নিরপেক্ষ গণমাধ্যম আধুনিক রাষ্ট্র কাঠামো ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। ক্ষমতার রাজনীতিতে ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি-অপকর্মের বিরুদ্ধে স্বাধীন সাংবাদিকতা এক বড় প্রতিবন্ধক। গণমাধ্যমের ওপর নানাভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা প্রায় অসম্ভব হওয়ায় সরকার এখন একটি ভীতিকর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আশ্রয় নিচ্ছে। বিতর্কিত আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় ইতোমধ্যে শত শত মামলা হয়েছে এবং এসব মামলার বেশিরভাগই মূলত রাজনৈতিক কর্মী ও সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে।

নেতৃদ্বয় বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা, মুক্ত গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার সাংবিধানিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা লঙ্ঘন করে মানুষের কণ্ঠরোধের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে সবাইকে মতপার্থক্য ঘুচিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মে দাঁড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে- এটি শুধু মুক্ত গণমাধ্যম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিক ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নাগরিক নিরাপত্তা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, আইনের শাসন ও সভ্য দুনিয়ায় জাতির আত্মপরিচয়ের স্বার্থ।

ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্ত গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় নতুন প্রজন্মকে এমন একটি বিপরীত অবস্থানে ঠেলে দেবেন, তা প্রত্যাশিত নয় বলে মন্তব্য করেন ন্যাপ নেতৃদ্বয়।