দেশের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আগামী পাঁচ বছর ইলিশ রফতানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বুধবার (৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ কথা জানান।মন্ত্রী জানান, দেশের চাহিদা পূরণ করে তবেই বাইরে রফতানি হবে। আপাতত দেশের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের ১২ বছর হয়ে গেছে। এই ১২ বছরে আমাদের মৎস ও প্রাণিসম্পদের অনেক উন্নতি হয়েছে।‘২০১০ সালে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২.৯৯ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে ৫.৩৩ লাখ মেট্রিক টন। ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম।’মন্ত্রী বলেন, গ্রামের মানুষ এখনও ইশিল খেতে পারে না। তাদের ইলিশের স্বাদ দিতে হবে। অতএব আগামী ৫ বছরে ইলিশ রপ্তানির চিন্তা নাই।মূলত, এই ইলিশ উৎপাদ বৃদ্ধির পেছনে সরকারের অনেক বড় উদ্যোগ এবং ব্যবস্থাপনা ছিলও। তার মধ্যে জাটাক ধরা বন্ধ, মা ইলিশ রক্ষা, অবৈধভাবে ইলিশ ধরা বন্ধ, জাল আটক করা, চোরাই পথে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ ছিলো। এ কারণেই ইলিশের উৎপাদন আজকে প্রায় দ্বিগুণ। অতএব ইলিশ রপ্তানি যৌক্তিক হবে না।এছাড়া সার্বিকভাবে মাছ উৎপাদন ১২ বছর আগে ছিল ৩০.৬২ লাখ মেট্রিক টন, যেটা বর্তমানে ৪৪.৮৮ লাখ মেট্রিক টন বলেও জানান মন্ত্রী।উল্লেখ্য মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের চলতি মাসের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ এখন বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে। বাংলাদেশের পরই ইলিশ উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে ভারত। তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিয়ানমার। ইরান, ইরাক, কুয়েত ও পাকিস্তানে উৎপাদন হচ্ছে বাকি ইলিশ। ওয়ার্ল্ডফিশ, মৎস্য অধিদপ্তর ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, শুধু পরিমাণের দিক থেকেই নয়, আকৃতিতেও বাংলাদেশের ইলিশের ধারে-কাছে নেই কোনো দেশ। ২০১৪ সালে এ দেশে ধরা পড়া ইলিশের গড় ওজন ছিল ৫১০ গ্রাম। গত বছর তা বেড়ে ৯১৫ গ্রাম হয়েছে। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের হিসাবে চলতি বছর তা আরও বেড়ে ৯৫০ গ্রাম হতে পারে।অন্যদিকে ভারত, মিয়ানমার বা আরব সাগরের তীরবর্তী দেশগুলোয় যে সামান্য পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়েছে, তার গড় ওজন ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের মধ্যে। পুষ্টিগুণ ও স্বাদের দিক থেকেও বাংলাদেশের ইলিশকেই সেরা বলে থাকেন বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা।