নতুন শিক্ষাক্রমে প্রণীত পাঠ্যবইয়ের বিভিন্ন কনটেন্ট নিয়ে সমালোচনা এখনো শেষ হয়নি। এরই মাঝে নবম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা বইয়ের একটি বিষয় নিয়ে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, বইটিতে অন্তর্বাস বিক্রির ওয়েবসাইটের ঠিকানাযুক্ত একটি কিউআর কোড সংযুক্ত রয়েছে।
নবম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা বইয়ের উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা অংশটি রয়েছে ৩০ থেকে ৬০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত। এর মধ্যে ৩৮ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘ব্যবসার ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিং বা বিপণন পরিকল্পনা’-সংক্রান্ত ৬ নম্বর ধাপে উদ্যোক্তা হিসেবে কীভাবে ব্যবসা শুরু করতে হয় সেটি উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই পৃষ্ঠার ২.১ নম্বর চিত্রে বিভিন্ন মাধ্যমে পণ্যের বিজ্ঞাপনের নমুনার চিত্র তুলে ধরে সেখানে নিত্যদিন স্টোরের একটি ছবি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আইকন দেওয়া হয়েছে। তবে এগুলোর মাঝে একটি কিউআর কোড সংযুক্ত করা হয়েছে। কোডটি স্ক্যান করলে Trucss.com.br নামক ওয়েবসাইট সামনে আসছে। এটি পর্তুগিজ একটি নারীদের অন্তর্বাস বিক্রির ওয়েবসাইট। যেখানে নারীদের অন্তর্বাস পরে বিজ্ঞাপনের মডেল হতে দেখা যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে এই ওয়েবসাইট পর্তুগিজ নারীদের অন্তর্বাস বিক্রির ওয়েবসাইট বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অনলাইনে এই নামে বিজ্ঞাপনের শেষ নেই।
এর আগে, চলতি বছরে শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এর মধ্যে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের ‘শরীফার গল্প’ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ‘শরীফার গল্প’র বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি বিশেষজ্ঞ কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে গল্পটি পাঠ্য বই থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এরই মাঝে জীবন ও জীবিকা বইয়ের কিউআর কোড নিয়ে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতি, পাঠ্যবই ও গাইড বইয়ের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিয়ে চরম অস্বস্তি বিরাজ করছে অভিভাবক মহল থেকে শুরু করে শিক্ষকসহ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। অভিভাবকদের মতে দ্বিতীয় শ্রেণি হতে ছাত্রছাত্রীদের হাতে গাইড বই কিনে দিতে তাঁদের অনেকেই অক্ষম। এক্ষেত্রে সরকারকেই এগিয়ে আসা উচিৎ। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির এসময়ে যাদের নুন আনতে পানতা ফুরায় তাদের পক্ষে বাচ্চাদের এতোসব বাড়তি খরচ কোত্থেকে আসবে।
মোহাম্মদ সফি নামের আরেকজন বলেন, ‘দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে ঠিকই কিন্তু সে উন্নয়ন আমাদের জন্য নয়। যাদের উন্নয়ন হয়েছে তারা খুবই ভাগ্যবান,আমাদের সে সৌভাগ্য নেই।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক বলেন, উনার নিজেরই বোধগম্য নয় এই বিষয়গুলো।