বাচ্চারা বাড়ি ফেরার জন্য কাঁদছে, কিন্তু ঠিকানা নেই!

0
28

টানা চতুর্থদিনের মতো সরকার পতনের দাবিতে উত্তাল আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভান। নাগরনো- কারাবাখ যুদ্ধ বন্ধে করা চুক্তির বিরোধিতা করে শুক্রবারও রাস্তায় আন্দোলনে নামেন হাজার হাজার বাসিন্দা। আর্মেনিয়া, আজারবাইজান এবং রাশিয়ার মধ্যে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী কারাবাখের আর্মেনীয় বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। নিজ হাতেই পুড়িয়ে ফেলছেন সাজানো সংসার, বাড়িঘর। যুদ্ধ যেন থেমেও থামেনি নাগরনো-কারাবাখের আর্মেনীয় বাসিন্দাদের। নিজেদের সমস্ত অস্তিত্ব ধ্বংস করে দিয়ে একে একে সবাই পাড়ি দিচ্ছেন অনিশ্চিত ঠিকানায়।একজন জানান, ২১ বছর একটা জায়গায় থাকার পর যদি সেটা ছেড়ে দিতে কেউ বাধ্য হয় তাহলে কী আর বলার থাকে!ক্ষুব্ধ আরেক বাসিন্দা বলেন, নিজেরাই নিজেদের সব পুড়িয়ে দিচ্ছি। মুসলমানদের জন্য কিছুই রেখে যাবো না আমরা।অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত এক বাসিন্দা জানান, আমাদের আর কোনো ঠিকানা নেই। বাচ্চারা বাড়ি ফেরার জন্য কাঁদছে। কোথায় যাবো ওদের নিয়ে!আজারি সেনাদের সবশেষ নিজেদের আয়ত্বে নেয়া অঞ্চল সুশির পথে পথে পড়ে আছে দুই দেশেরই অসংখ্য সেনার লাশ। আজারবাইজান ও তুরস্কের পতাকা উড়ছে তল্লাশি চৌকিগুলোতে। শুক্রবার আজারি সেনাদের সঙ্গে এক হন রুশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর একদল সদস্য। চুক্তি অনুযায়ী একইদিন, আরেকটি দল পৌঁছায় স্টেপানাকার্ট এলাকায়।আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যকার যুদ্ধে ৮ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন। ক্ষতির শিকার হয়েছেন আরও ৪ হাজার বাসিন্দা। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও অগণিত মানুষ। এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আশ্রয় আর মানবিক সহায়তা দিতে অস্থায়ী তাঁবু নির্মাণসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেয়ার আদেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।পুতিন বলেন, যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোতে মানবিক সহায়তা দিতে রুশ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি মানবিক সহায়তা সংস্থা গঠন করা হচ্ছে। শরণার্থীরা স্থায়ী ঠিকানায় ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি আর্মেনিয়ার বেসামরিক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ করে সেখানকার জীবন-যাপন স্বাভাবিক করতেও কাজ করবে এ সংস্থা।শান্তি চুক্তির প্রতিবাদে শুক্রবারও টানা চতুর্থদিনের মতো বিক্ষোভে উত্তাল ছিল আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভান। ১০ হাজারের বেশি আন্দোলনকারীর উপস্থিতিতে সরব ছিল রাজপথ। দেশটির পার্লামেন্ট ভবনের সামনে জড়ো হয়ে আজারবাইজানের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে চুক্তিতে সম্মত হওয়ায় আর্মেনীয় প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের পদত্যাগের দাবি তোলেন তারা।চলমান বিক্ষোভ থেকে এ পর্যন্ত বিরোধী দলের অন্তত ১০ নেতাসহ অর্ধশতাধিক মানুষকে আটক করা হয়েছে।