বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় লড়ার জন্য জেলায় জেলায় আইনজীবী সেল আছে কি না, এমন প্রশ্ন তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম (আসিফ নজরুল)। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ প্রশ্ন তুলেছেন।
ওই স্ট্যাটাসের শিরোনামে আসিফ নজরুল লিখেছেন, বিএনপি কিভাবে শক্তিশালী হতে পারে?
এরপর তিনি লিখেছেন, বিএনপিকে নিয়ে আমার সমালোচনামূলক একটা বক্তব্য অনেকে দেখেছেন। সেখানে মূলত বিএনপির গবেষণা ও প্রচারণা কার্যক্রমের চরম দুর্বলতার কথা বলা হয়েছিল।
তিনি আরো লিখেছেন, সেদিনের অনুষ্ঠানে আমার আরো কিছু বলার ইচ্ছে ছিল, সময়ের কারণে বলিনি। সেদিন প্রশ্ন করার ইচ্ছে ছিল, বিএনপির ষ্টিয়ারিং কমিটিতে মেজর হাফিজ বা আবদুল্লাহ আল নোমান নেই কেন? বা ৭০ বছরের নিচের কেউ সেখানে নেই কেন? রাজশাহীর একজন জনপ্রিয় মেয়র ছিলেন, মিজানুর রহমান মিনু, উনি এবং উনার মতো ঢাকার বাইরের নেতারা কই এখন?
বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব নির্ধারণেও ভুল রয়েছে দাবি করে তিনি প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ঢাকার নেতারা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে, এর বিকল্প নিয়ে কি ভাবা হয় ঠিকমতো?
আসিফ নজরুল আরো লিখেছেন, বিএনপির সাইবার সেল, বা অনলাইন কার্যক্রম দুর্বল কেন? বিএনপিকে সব ধরনের ভুল এড়াতে হবে, আরো শক্তিশালী হতে হবে। দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য শক্তিশালী দ্বিদলীয় ব্যবস্থা বাংলাদেশে অপরিহার্য।
একইসময়ে আওয়ামী লীগকে পরামর্শ দিয়েও আরেকটি পোস্ট করেছেন তিনি। আলোচিত এ অধ্যাপক বলেন, আমার ধারণা আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমার দিকে। জনপ্রিয়তা যে খুব প্রয়োজনীয় তা সম্ভবত দলের শীর্ষ নেতৃত্বও ভাবেন না। তবে আমি মনে করি, কিছু পদক্ষেপ নিলে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
এরপর তিনি নয়টি পরামর্শ উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হলো:
১) দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক লুটপাটকারী ও অর্থ পাচারকারী চক্রের কিছু শীর্ষ ব্যক্তির বিচার করে।
২) দলের নেতৃত্বে ত্যাগী ও সৎ নেতাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে।
৩) দ্রব্যমূল্য রোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়ে।
৪) ভারত থেকে সরে এসে চীনমুখী পদক্ষেপ নিয়ে।
৫) বাংলাদেশে হিন্দুদের নির্যাতন হলে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করে, ঠিক সেভাবে ভারতে মুসলমানদের নির্যাতন হলে তার প্রতিবাদ করে।
৬) ১৮ বছরের উপরে সবার বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে।
৭) সামজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়িয়ে এবং সেখানে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি দূর করে।
৮) বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে, ড. ইউনূসকে হয়রানি বন্ধ করে।
৯) কথাবার্তায় অশালীনতা, দম্ভ আর মিথ্যাচার কমিয়ে এনে।
তিনি আরও বলেন, জনপ্রিয়তা তলানিতে থাকলে আওয়ামী লীগ কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দিবে না। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি তাই দেশের স্বার্থে প্রয়োজন।