স্পোর্টস ডেস্ক :: সকল নাটকীয়তা ও জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০২০-২১ মৌসুমে বার্সেলোনার হয়েই খেলছেন ক্লাবটির আর্জেন্টাইন জাদুকর লিওনেল মেসি। নতুন মৌসুম শুরুর আগে তিনি ক্লাব ছাড়তে চাইলেও, ম্যানেজম্যান্টের আপত্তির মুখে থেকে যেতে বাধ্য হয়েছেন বার্সা অধিনায়ক।
তবু ক্লাব ছাড়ার সুযোগ ছিল মেসির সামনে। সেজন্য আবার নামতে হতো আইনি লড়াইতে। কিন্তু শৈশবের প্রিয় ক্লাবকে আদালতে নিতে রাজি ছিলেন না মেসি। তাই বার্সেলোনার টিম ম্যানেজম্যান্টের কথা রেখেছেন তিনি, থেকে গেছেন আরও এক মৌসুমের জন্য। তবে তিনি যে ক্লাবের ওপর সন্তুষ্ট নন, তা বোঝা গিয়েছে স্পষ্ট।
আর এ পুরো ঘটনায় বার্সেলোনার পক্ষ থেকে মেসির সঙ্গে বাজে আচরণ করা হয়েছে বলে মনে করেন আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা। শুধু তাই নয়, মেসির সঙ্গে যে এমনটা করা হবে, তা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন ম্যারাডোনা। কেননা তার সঙ্গেও এমন করেছিল বার্সেলোনা।
অবশ্য শুধু বার্সেলোনা নয়, ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলি ছাড়ার সময়েও খুব একটা সুখকর ছিল না ম্যারাডোনার অভিজ্ঞতা। তাই মেসির বর্তমান অবস্থাটা বুঝতে পারছেন তিনি। শুক্রবার নিজের ৬০তম জন্মদিনে আর্জেন্টাইন পত্রিকা ক্লারিনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মেসির এ বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন ম্যারাডোনা।
তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম, এটি বাজেভাবে শেষ হতে চলেছে। আমি ভেবেছিলাম লিও চলে যাবে। আমার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল। বার্সেলোনা কোনো সহজ ক্লাব নয়। সে (মেসি) অনেক বছর ধরে সেখানে আছে। তার সঙ্গে তারা তেমন আচরণ করেনি, যতটা তার প্রাপ্য। সে তাদের সব কিছু দিয়েছে। তাদের সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে গেছে। একদিন সে ক্লাব ছাড়তে চাইল এবং তারা তাকে না বলে দিল।’
নাপোলিতে থাকাকালীন নিজের অভিজ্ঞতার কথা মনে করে তিনি আরও বলেন, ‘মার্শেই দ্বিগুণ বেতন দিতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তখন আমি নাপোলিতে। ক্লাব প্রেসিডেন্টকে বললাম, আমাকে যেতে দাও। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করে বললেন, আমরা যদি উয়েফা কাপ জিতি তাহলে তিনি আমাকে যেতে দেবেন। আমরা যেদিন জিতলাম, তার অফিসে গিয়ে তাকে বললাম, আমি চলে যাচ্ছি, কিন্তু তিনি আমাকে যেতে দেননি।’
এদিকে ফুটবলের কারণেই বিশ্বজোড়া খ্যাতি পাওয়ায় খেলাটির প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন ম্যারাডোনা। সঙ্গে জানিয়েছেন নিজের একটি আক্ষেপের কথাও। দীর্ঘদিন পর হলেও ম্যারাডোনা বুঝতে পারছেন, মাদকের প্রতি আকৃষ্ট না হলে আরও বেশি ম্যাচ খেলতে পারতেন তিনি।
ম্যারাডোনার ভাষ্য, ‘ফুটবল আমাকে সবকিছু দিয়েছে। যা আমি হয়তো কখনও কল্পনাও করিনি। আমার যদি মাদকাসক্তি না থাকত, তাহলে আরও অনেক বেশি ম্যাচ খেলতে পারতাম। তবে এগুলো এখন সব অতীত, আমি ভালো আছি। তবে সবচেয়ে বেশি দুঃখ হয়, আমার পাশে এখন বাবা-মা নেই।’