রোজিনার ঘটনা দুর্নীতিবাজদের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি বার্তা : টিআইবি

0
14

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ সময় আটকে রেখে হেনস্তা এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা দেয়ায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের মামলা প্রত্যাহার এবং তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে। একইসঙ্গে এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানায়।

মঙ্গলবার (১৮ মে) টিআইবির পরিচালক আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন শেখ মনজুর-ই-আলম প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

টিআইবি বলে, করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতের ক্রয় থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দুর্নীতির যে ভয়াল ও অমানবিক চিত্র জাতির সামনে এসেছে, তার অনেকটাই সম্ভব হয়েছে রোজিনা ইসলামের মতো অকুতোভয় সাংবাদিকদের কারণে। এ সময় এমন ঘটনা মুক্ত সাংবাদিকতার টুটি চেপে ধরারই নামান্তর।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন সময় সংঘটিত অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং করোনা সঙ্কট মোকাবিলায় প্রতিষ্ঠানটির সমন্বয়হীনতা, পেশাদারিত্বের যে ঘাটতি ও স্বরূপ রোজিনা ইসলামের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এটাকে তারই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করাই স্বাভাবিক। এখন পর্যন্ত যারা কিছুটা হলেও নীতি ও নিষ্ঠার সঙ্গে সাংবাদিকতা করছেন, শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে নিয়মিত জনস্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছেন, এটা তাদের জন্য দুর্নীতিবাজদের পক্ষ থেকে একটা হুঁশিয়ারি বার্তা বলে মনে করি। এর রেশ আমাদের ধারণারও বাইরে।

রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার বিষয়কে টেনে এনে ঔপনিবেশিক আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩-এর ৩ ও ৫ ধারা এবং পেনাল কোডের ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় মামলার বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে রোজিনা ইসলামের সাংবাদিক পরিচয়কে কোনোভাবেই বিবেচনা করা হয়নি, বরং তাকে ফাঁদে ফেলে শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে পুরো গণমাধ্যমকেই একহাত নেয়ার অপচেষ্টা করেছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল।

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইন পাস হওয়ার ফলে বাক ও মত প্রকাশের যে আশার আলোটুকু আমরা দেখতে শুরু করেছিলাম, অচিরেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে নিবর্তনমূলক ৩২ ধারায় ঔপনিবেশিক আমলের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩’ সন্নিবেশের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল রোজিনা ইসলামের ঘটনার মধ্য দিয়ে তার নগ্ন পরিণতি পেয়েছে। এর নিন্দা জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি।

এছাড়া অন্যান্য সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে টিআইবি। এ সময় গণতন্ত্র ও সুশাসনকে সমুন্নত রাখার স্বার্থে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের ভবিষ্যতের জন্য রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানায় সংস্থাটি।