শুধু বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ও বঙ্গকন্যার জয়গানে বিভোর ছিলেন ডা. জাকেরিয়া চৌধুরী

0
55

সবাই পদপদবী ও চেয়ারের পাগল। রাজনীতি করলে পদ পেতে হবে ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করতে হবে এমনটাই এখন রাজনীতির রেওয়াজ। পদ ও চেয়ারের জন্য কত বাঘা বাঘা নেতা ক্ষনিকের মধ্যে রাতের অন্ধকারে ডিগবাজি খেয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। বর্তমান রাজনীতে এটা চলমান প্রক্রিয়া বলা যায়। তবে রাজনীতিকে যারা আলোকিত করেছেন তারাই এখন অন্ধকারে। এইসব রাজনৈতিক ব্যক্তিরা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে রাজনীতি করেছেন মানুষের সেবা করার জন্য। আর এই সেবাকে ওনারা ইবাদত হিসেবে গণ্য মনে করতেন। তেমননি একজন রাজনীতিবিদ হলেন ডা. এ.এম.এম. জাকেরিয়া চৌধুরী। যিনি আপাদমস্তক ছিলেন বঙ্গবন্ধু প্রেমী। কোন লোভ লালসা তাকে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। ৬৬ ছয় দফা আন্দোলনে ডা. এ.এম.এম. জাকেরিয়া চৌধুরী গ্রেফতার হন। প্রখ্যাত আইনজীবী উইলিয়ামস এর নেতৃত্বে আগরতলা মামলা পরিচালনায় আওয়ামী লীগ কর্মীদের সংগৃহিত মামলার অর্থ জননেতা এম এ আজিজের নিদের্শনায় বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হাতে পৌঁছে দেন তিনি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ডা. এ.এম.এম. জাকেরিয়া চৌধুরী উনবিংশ শতাব্দীর চল্লিশ দশক থেকে ২০১৩ সালের ২১ অক্টোবর পর্যন্ত আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর অাদর্শকে বুকে ধারন করে মানবতার কল্যাণে কাজ করে গেছেন।

ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম ডাঃ জাকেরিয়া চৌধুরী। দেশ প্রেমিক প্রচারবিমুখ, নিলোভ এ মানুষটি বাঙালী জাতির ক্রান্তিকাল এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দুসময়ে আওয়ামী লীগের অগ্রসেনানী হিসেবে কাজ করেন। কখন পদপদবীর জন্য লালায়িত ছিলেন না। দল থেকে ছিলনা কোন চাওয়া পাওয়ার। শুধু বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ও বঙ্গকন্যার জয়গানে ছিলেন বিভোর।

এই আলোকিত মানুষটি ২০১৩ সালের ২১শে অক্টোবর মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ডাকে সারা দিয়ে আমাদের ছেড়ে পড়পাড়ে পাড়ি জমান। আজ এই মানবতাবাদী লোকটির ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। পরপারে ভালো থাকবেন হে মানবতার ফেরিওয়ালা।

রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী ডা: এ.এ.এম জাকেরিয়া চৌধুরীর অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার বিগত ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর নগরীর ঐতিহ্যবাহী কাজির দেউড়ি চত্বরকে ডা. এ.এম.এম.জাকেরিয়া চৌধুরী চত্বর হিসেবে উদ্বোধনের মাধ্যমে নামকরণ করেন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. এ.এম.এম.জাকেরিয়া চৌধুরী
১৯২৬ সালের ২৩শে এপ্রিল চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়ার এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম এবং বিশিষ্ট আইন বিশারদ দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরীর বংশধর। বাবা মরহুম আলহাজ্ব গোলাম রহমান চৌধুরী ছিলেন তদান্তিন বৃটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলে জরিপ কমকতা’। মা মরহুমা ছবিলা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। ডা. জাকেরিয়া ১৯৫০ সালের ২০শে জুন আছিয়া খাতুনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ১০ ছেলে ২ কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন।

লেখক মুহাম্মদ মহরম হোসাইন
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
নির্বাহী সদস্য, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)
[email protected]