বিরোধী দলীয় আইন প্রণেতাদের সমালোচনা আর দীর্ঘ আলোচনার পর চলমান বাজেট অধিবেশনে ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস করা হলো। এ সময়, অর্থপাচার ও স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা।জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আর্থিক দুর্নীতি কমাতে প্রণয়ন করা হবে নতুন আইন। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক জানান, ব্যবস্থাপনা ভালো ছিল বলেই করোনায় মৃত্যুর হার এখনও কম।করোনা সংকটের শুরুতেই একে একে মাস্ক, পিপিই আর কোভিড টেস্ট কিট নিয়ে ভয়াবহ দুর্নীতি সামনে আসতে থাকে স্বাস্থ্য বিভাগের।মহামারি মোকাবিলায় দেশে যে মন্ত্রণালয়টি নেতৃত্ব দিচ্ছিল খোদ সেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমন দুর্নীতিতে নড়েচড়ে বসে সরকারও। মামলা আর আইনি প্রক্রিয়ায় ডা. সাবরিনা ও সাহেদদের মতো কিছু মানুষ ধরা পড়লেও বিচারের নজির দেখেনি দেশের মানুষ।শুধু তাই নয়, পিকে হালদার ও এমপি পাপুলের মতো অন্তত দুই ডজন দুর্নীতিবাজের হাত দিয়ে দেশের বাইরে পাচার হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হলেও এখনও লাপাত্তা পিকে হালদার। এসব ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়েছে। বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কোনোটির। কিন্তু কাজের কাজ হয়েছে কতটুকু।এই অবস্থায়, সংসদের চলমান বাজেট অধিবেশনে সম্পূরক বাজেট পাসের আলোচনায় বিরোধীদলীয় আইন প্রণেতারা সরব এসবের জবাব চেয়ে।চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির এমপি হারুনুর রশীদ বলেন, কোভিডকালীন অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি করেছেন, এই কোভিডকালীনে জনগণের -জনকল্যাণের জন্য কি কি অর্থ খাতে ব্যয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী চাচ্ছেন সে বিষয় আমাদের জানাতে হবে। ব্যয় তো যেটা ছিল সেটাও তিনি করতে পারেননি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজানোর জন্য সংস্কারের প্রয়োজন। বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, কেন তারা এই ১০ মাসে মাত্র ২৫% ব্যয় করতে পেরেছে? ৭৫ % কেন অব্যবহৃত থেকে গেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার জবাব দেবেন। জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বেগমপাড়া বলেন আর যে পাড়া বলেন আমেরিকাতে যারা বাড়ি করেছেন, মালয়েশিয়ার যারা বাড়ি করেছে, দুদকের হেড অফিস আপাতত বাংলাদেশে রাখার দরকার নেই। ওটা কানাডায় তৈরি করুক। আরেকটি মালয়েশিয়াতে ব্রাঞ্চ করুক, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও দুবাইতে করুক। এখান থেকে আমরা বুঝতে পারবো দেশের সঠিক চিত্রটা কী? এ সময়, বিরোধীদলীয় উপনেতা জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরও প্রশ্ন তোলেন মন্ত্রণালয়ের অদক্ষতা নিয়ে।তবে, এতসব সমালোচনার জবাবে টিকা নিয়ে আর কোনো সংকট হবে না জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজের পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি কমাতে অর্থমন্ত্রী দিলেন নতুন আইন তৈরির আশ্বাস।অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেক কষ্টের অর্জিত টাকা, এগুলো চলে যাবে সিস্টেমের বাইরে এগুলো বন্ধ করতে হবে। আমরা নতুন নতুন আইন তৈরি করবো। যারা দেশের বাইরে টাকা পাচার করেছে তাদের নাম আপনাদের কাছে থাকলে দেন। আমার কাছে নেই। সোমবারের (৭ জুন) অধিবেশনে বিদায়ী অর্থবছরের জন্য ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ ৩২ হাজার সম্পূরক বাজেট পাস করে সংসদ।