সাঈদীর চিকিৎসা নিয়ে যা বলল বিএসএমএমইউ 

0
16

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর চিকিৎসা যথাযথ প্রটোকল মেনেই হয়েছে বলে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালে সাঈদীর রোগের ধরন, চিকিৎসা ও সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে তার ছেলে মাসুদ সাঈদী অবগত ছিলেন বলেও জানিয়েছে তারা।

বুধবার বিএসএমএমইউর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।

সাঈদীর চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত এক চিকিৎসককে প্রাণনাশের হুমকির পর সাধারণ ডায়েরির (জিডি) প্রেক্ষাপটে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ তাদের বক্তব্য তুলে ধরল।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক এসএম মোস্তফা জামান ধানমণ্ডি থানায় জিডি করেন। এরপর সাঈদীর চিকিৎসা নিয়ে বুধবার বেলা তিনটায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে পরে তা বাতিল করে বিএসএমএমইউ। বিকালে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৮৪ বছর বয়সী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ১৩ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টায় বিএসএমএমইউর জরুরি বিভাগে আনা হয়। তার ভর্তি থেকে শুরু করে পরবর্তী সব চিকিৎসা বিধিসম্মতভাবে আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস অনুসরণ করে সম্পন্ন হয়। তার চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকরা সঠিকভাবে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। পরদিন ১৪ আগস্ট বিকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে তার সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। অ্যাডভান্স কার্ডিয়াক লাইফ সাপোর্ট প্রটোকল অনুযায়ী তার চিকিৎসা চলতে থাকে; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান। এই রোগের গতিপ্রকৃতি, চিকিৎসা ও সম্ভাব্য পরবর্তী পরণতি সম্পর্কে তার সন্তান মাসুদ সাঈদী অবগত আছেন।

রোববার কাশিমপুর কারাগারে বন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে সাঈদীকে গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। পরে বিএসএমএমইউতে আনা হয়। সেখানে হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক চৌধুরী মেশকাত আহমেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ আগস্ট রাত ৮টা ৪০ মিনিটে মৃত্যু হয় সাঈদীর। তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলে ছিলেন ডা. এসএম মোস্তফা জামান।

এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় ডা. মোস্তফা জামানকে। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে ধানমণ্ডি থানায় জিডি করেন ডা. মোস্তফা। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘কতিপয় ব্যক্তি’ সামাজিক মাধ্যম এবং ইউটিউবে বিভিন্ন আইডি থেকে তার বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ করছে। মেসেঞ্জারে বিভিন্ন গ্রুপে এবং ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত আইডিতে ‘ভয়-ভীতি’ দেখাচ্ছে এবং ‘প্রাণনাশের হুমকি’ দিচ্ছে। তাতে তিনি ‘ভীত, শঙ্কিত’।

থানায় জিডির পর সাংবাদিকদের মোস্তফা জামান বলেন- হাসপাতালে যে রোগীই আসুক, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষ সবাইকে সমান চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা পেশার যে মূল আদর্শ, সেটাকে সমুন্নত রেখেই সেবা করেন তারা। এখানেও (সাঈদীর ক্ষেত্রে) সেইমতো কাজ করা হয়েছে কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি এবং আমরা রোগীকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়েছি, কোনো ভুল চিকিৎসা বা অপচিকিৎসার যেরকম প্রপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে, সেরকম হয়নি।’