চিত্রনায়ক সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত। পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলা চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন।
রোববার (৩১ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালত পিবিআইর দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন।
এদিন চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দেন সালমান শাহের মায়ের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ। একই সঙ্গে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর ভার্চুয়ালি জবানবন্দি নিতে আবেদন করা হয়। আদালত মামলার বাদী উপস্থিত না থাকায় আবেদনটি খারিজ করে দেন। সালমান শাহের মায়ের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ৬০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেন পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম। এর আগের দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলা চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন।
পিবিআইপ্রধান বলেন, তদন্তকালে ঘটনার সময় উপস্থিত ও ঘটনা সংশ্লিষ্ট ৪৪ সাক্ষীর জবানবন্দি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয়। ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয়। পাশাপাশি ঘটনার সংশ্লিষ্ট আলামত জব্দ করা হয়। এসব বিষয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, চিত্রনায়ক সালমান শাহ পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছেন। হত্যার অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি।
পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের আত্মহত্যার পাঁচটি কারণ উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো- চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে সালমানের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা, স্ত্রী সামিরার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ, মাত্রাতিরিক্ত আবেগপ্রবণতার কারণে একাধিকবার আত্মঘাতী হওয়া বা আত্মহত্যার চেষ্টা, মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসা জটিল সম্পর্কের বেড়াজালে পড়ে পুঞ্জীভূত অভিমানে রূপ নেওয়া ও সন্তান না হওয়ায় দাম্পত্য জীবনে অপূর্ণতা।
চলচ্চিত্রে জনপ্রিয়তার সর্বোচ্চ শিখরে থাকাকালে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। ওই ঘটনায় তখন অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী (প্রয়াত)।