সিইসি হয়তো হাল ছেড়ে দিচ্ছেন : টিআইবি

0
13

সব দলের অংশগ্রহণ না থাকলেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব’―শনিবার (১৪ অক্টোবর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের দেয়া এ বক্তব্যকে স্ববিরোধী উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, সিইসির এ বক্তব্যের কারণে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রত্যাশিতভাবে গ্রহণযোগ্য, অন্তর্ভুক্তি এবং অংশগ্রহণমূলক হওয়া নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। এছাড়াও সিইসির শনিবারের বক্তব্য শুনে আশঙ্কা হচ্ছে যে, তিনি হয়তো হাল ছেড়ে দিচ্ছেন।রোববার (১৫ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এমনটা জানায় টিআইবি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মাত্র দু’দিন আগেই তিনি একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, প্রধান রাজনৈতিক বিরোধী দল বিএনপি’র অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বারংবার অবস্থান পাল্টানো সন্দেহজনক ও বিভ্রান্তিমূলক উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দলীয় চিন্তার উর্ধ্বে থেকে নির্বাচনে কাজ করার নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি যখন তিনি বলেন, ‘… কে নির্বাচনে আসলো, কে আসলো না… জনগণ যদি আসেন, ভোটাররা যদি আসেন, তারা ভোট প্রয়োগ করেন, তাহলেই নির্বাচনের একটা বড় সফলতা…।’ তখন তার এ ঘোষণায় বাস্তবে দলীয় পক্ষপাতিত্বের প্রতিফল হয়েছে, যা দেশবাসীর মধ্যে হতাশা বাড়াচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সাংবিধানিক সংস্থার প্রধানের এমন অবস্থান থাকলে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা কতোটা পূরণ হবে সেটা নিয়ে আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ আছে। জনগণ ভোট দিলেই বড়ো সফলতা, এটি যেমন সঠিক, তেমনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অজানা থাকার কথা নয় যে, জনগনের ভোটে অংশগ্রহণের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিত সাপেক্ষে বাস্তব অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি অপরিহার্য।

স্ববিরোধী ও পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থান পরিহার করে নির্বাচনকালীন সরকারের পাশাপাশি প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর নিরপেক্ষ ও স্বার্থের দ্বন্দ্বের ঊর্ধ্বে ভূমিকা পালনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা ও অধিপরামর্শমূলক কর্মকাণ্ডে অগ্রসর হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

এছাড়াও বিবৃবিতে বলা হয়েছে, টিআইবি মনে করে, আগের জাতীয় নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে আসন্ন নির্বাচন অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া সবচেয়ে বেশি জরুরি। টিআইবির বিশ্বাস, সিইসি নিশ্চয়ই জানেন, শুধু আইনগত বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করে নির্বাচন শেষ করলে তাতে জনগনের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে না। এ বাস্তবতায়, সিইসির গত শনিবারে বক্তব্য শুনে আশঙ্কা হচ্ছে যে, তিনি হয়তো হাল ছেড়ে দিচ্ছেন। কোনো অবস্থাতেই এর কোনো ইতিবাচক ব্যাখ্যা দাঁড় করানো সম্ভব নয়। দেশবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে কমিশনের কাছে আরও বেশি উদ্যোগ প্রত্যাশিত।