ঘোড়াঘাটের ইউএনওর ওপর হামলার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা উপজেলা যুবলীগের সদ্য বহিষ্কৃত আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু রাফে খন্দকার শাহেনশার ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এছাড়া সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, বালুমহল ও মাদক-ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও নানা অভিযোগ জাহাঙ্গীর ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে। দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য সিবলী সাদিকের সহায়তায় যুবলীগের নেতৃত্ব পেলেও তার ওপরই হামলা করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তার এ বেপরোয়া হয়ে ওঠায় মদদ দিয়ে গেছেন ঘোড়াঘাটের উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেন শাহ। শাহেন শাহর প্রশ্রয়ে সব কিছুতেই পেশীশক্তি প্রয়োগই হয়ে ওঠে তার দর্শন।গাড়ি থামিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তার ওপর ঘোড়াঘাট পৌরসভার মেয়র মিলনকে মারপিট করেন জাহাঙ্গীর, মাসুদ রানা ও তাদের বাহিনীর সদস্যরা। এদিন নিজেদের দলীয় এমপি শিবলী সাদিকের ওপর হামলা করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর ও তার সহযোগী কয়েকজন কারণ তাদের বাদ দিয়ে বিএনপি দলীয় মেয়র মিলনের মাধ্যমে করোনা বিপর্যস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছিলেন এমপি। ওই মামলায় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন জাহাঙ্গীর বাহিনী।স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘোড়াঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান শাহেন শাহর ছত্রছায়ায় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীরের ত্রাসের রাজত্বে বাধ সেধেছিলেন ইউএনও ওয়াহিদা খানম। আর তাই তার হত্যাচেষ্টায় উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়কের সংশ্লিষ্টতার কথা উঠে আসছে বার বার।টেন্ডারবাজি, জমিদখল, সন্ত্রাস, মাদক-ব্যবসা, চাঁদাবাজিতে ভয়ংকর জনপদে পরিণত ঘোড়াঘাটে সাহস করে তাদের নিয়ে খবর প্রকাশ করে রোষানলে পড়তে হয়েছে সাংবাদিকদেরও।স্থানীয় একজন সাংবাদিক বলেন, তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে তাদের হুমকি ধামকিতে শঙ্কিত থাকতে হয় আমাদের।জাহাঙ্গীরকে যুবলীগের পদ পেতে সহায়তার কথা স্বীকার করে অনুশোচনা করছেন এমপি শিবলী সাদিক। তবে এখনও আস্কারা দিয়ে চলেছেন শাহেন শাহ।দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য সিবলী সাদিক বলেন, কমিটিতে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তার আচরণ পুরো পরিবর্তন হয়ে যায় এবং নিজেকে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত করে ফেলে।ঘোড়াঘাটের উপজেলা চেয়ারম্যান আবু রাফে খন্দকার শাহেন শাহ বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের কোন ত্রুটি না পেয়ে ছেড়ে দিয়েছে। এখানে তো আমার কিছু করার নেই।ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর নৃশংস হামলার ঘটনায় ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক (সদ্য বহিষ্কৃত) জাহাঙ্গীর আলম, তার অনুসারী আসাদুল এবং নবিরুল ও সান্টু নামে দুই রং মিস্ত্রীকে বৃহস্পতিবার ভোরে আটক করে র্যাব। তবে জাহাঙ্গীর আলমকে ধরেও র্যাব ছেড়ে দিয়েছে। এদিকে র্যাবের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর লাপাত্তা জাহাঙ্গীর।