কিছুদিন আগে অনেকটা হঠাৎ করেই ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় লাদাখ সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে চীন। জবাব দিতে বসে নেই ভারত সরকারও। তারাও বাড়তি সৈন্য পাঠিয়ে টহল জোরদার করেছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে দুই দেশের সেনারা। ফলে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে চীন-ভারত সম্পর্কে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় প্যানগং লেকের তীর, ডেমচক ও গালোয়ান উপত্যকা অঞ্চলের চার-পাঁচটি এলাকায় অমীমাংসিত চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) অন্তত ১২শ’ থেকে ১৫শ’ সদস্য একদম মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।
সোমবার একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, পিএলএ’র কিছু সীমান্ত প্রতিরক্ষা রেজিমেন্ট এলএসি’র নিকটবর্তী হয়েছে। কমপক্ষে ৫০০ সেনাকে মহড়া থেকে ওই অঞ্চলের সীমান্তের দিকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ভারতীয়দের দাবি, সীমান্তবর্তী প্যানগং লেক ও নিকটবর্তী গালোয়ান নদীর তীর দিয়ে রাস্তা তৈরির প্রতিবাদেই ভারতের এক থেকে তিন কিলোমিটার ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছে চীনা বাহিনী। গালোয়ান উপত্যকার মতো নির্ঝঞ্ঝাট এলাকাতেও হানা দিচ্ছে তারা।
ভারতীয় বিশ্লেকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে চীনের বিনিয়োগকারীদের সরে আসতে উদ্বুদ্ধ করা এবং করোনাভাইরাসের উৎস তদন্তে সমর্থন জানানোর কারণেই ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ চীন। এর জন্যই সীমান্তে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে তারা।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ভারতীয় বাহিনী এখনও শান্ত থাকলেও লাদাখের লেহ শহর ভিত্তিক তিনটি পদাতিক ডিভিশনে (একেকটি ডিভিশনে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার সেনা রয়েছে) বাড়তি সেনা পাঠানো হয়েছে।
সূত্র বলছে, এখন পর্যন্ত ওই অঞ্চলে সহিংসতার কোনও ঘটনা না ঘটলেও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বেশ কয়েকবার হটলাইনে আলাপচারিতা এবং ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ে সমঝোতার চেষ্টা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
তাদের দাবি, গালোয়ান উপত্যকার মতো শান্তিপূর্ণ এলাকায় পিএলএ’র সুসমন্বিত আক্রমণ অবশ্যই অনেক বড় সিদ্ধান্তের অংশ এবং এই আদেশ এসেছে সরাসরি চীনের শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক শাসকদের কাছ থেকেই।
সংবাদমাধ্যমটির সূত্র বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এখন উচ্চ পর্যায় থেকেই সিদ্ধান্ত আসতে হবে। সেটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বা ভারত-চীনের মধ্যে বিদ্যমান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হতে পারে।