নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় তিনতলা ভবনের নিচতলায় সেপটিক ট্যাংক বিস্ফোরণে এক শিশুসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। তাঁদের মধ্যে মাদ্রাসাছাত্র হাবিবুর রহমানকে (১৩) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং শাহিদা বেগমকে (৪০) নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রামারবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ওই বাড়ির নিচতলার রুমের দুই পাশের দেয়াল উড়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বাড়িটির নিচতলা।
মারা যাওয়া দুজন হলেন রামারবাগ এলাকার সাঈদ মিয়ার বাড়ির মেসের ভাড়াটে পোশাকশ্রমিক আবদুর রাজ্জাক (৩৫) ও মামুন মিয়ার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র পথচারী মো. জিসান (১২)।
আহত দুজন হলেন ওই এলাকার খাইরুল ইসলামের স্ত্রী মেসের রান্নার দায়িত্বে থাকা শাহিদা ও ওই এলাকার পিয়ার আলীর ছেলে মাদ্রাসাছাত্র হাবিবুর।বিজ্ঞাপন
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নারায়াণগঞ্জ অফিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন প্রথম আলোকে জানান, তিনতলা বাড়ির নিচতলার একটি রুমের সেপটিক ট্যাংকে গ্যাস জমে বিস্ফোরণে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণে ওই বাড়ির দেয়াল উড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ট্যাংকের ভেতর থেকে রাজ্জাককে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করেছেন।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার রামারবাগ এলাকার হাসান খানের ছেলে সাঈদ খান ও সোলায়মান খানের মালিকানাধীন তিনতলা বাড়ির নিচতলার রুমে মেস ছিল। সেখানে চারজন থাকতেন। বিস্ফোরণের সময় মেসে শুধু পোশাকশ্রমিক রাজ্জাক অবস্থান করছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ওই রুমের উত্তর ও পশ্চিম পাশের দেয়াল উড়ে গেছে। জানালার কাচ ভেঙে গেছে। বিস্ফোরণে বাড়ির পাশের সড়ক দিয়ে হেঁটে যাওয়া পথচারী শিশু জিসান ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ওই রুমের ভেতরে থাকা রাজ্জাক, পথচারী মাদ্রাসাছাত্র হাবিবুর ও ওই মেসে রান্নার দায়িত্বে থাকা শাহিদা আহত হন।
বাড়িওয়ালা সাঈদের স্ত্রী আঁখি বেগম বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বাড়ির নিচতলার ডান পাশের রুমের নিচে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণে তাদের বাড়ির ওই রুমের দেয়াল উড়ে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে চারজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনা হয়। পথেই শিশু জিসান ও হাসপাতালে আনার পর রাজ্জাকের মৃত্যু হয়। অপর শিশুকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত নারীকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সেপটিক ট্যাংক বিস্ফোরণে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন দুজন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।