স্বাস্থ্য ডিজির পদত্যাগই সমাধান নয়, দরকার পুরো ব্যবস্থার পরিবর্তন

    0
    128

    করোনাকালে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে খাদের কিনারে রেখেই সরে গেলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার সরে যাওয়া ছিল অবধারিত। তবে কেবল পদত্যাগ কোনো সমাধান হতে পারে না। পাহাড় সমান অভিযোগ মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। দেশের চিকিৎসাসেবার বেহাল দশা যেন ফুটে উঠেছে এই করোনকালে। প্রশ্ন ওঠে, মানহীন পিপিই, নকল এন নাইনটি ফাইভ মাস্ক নিয়ে বিতর্ক। চিকিৎসকদের প্রতি অবহেলা, ডাক্তার নার্সের নিম্ন মানের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা। এ

    সব নিয়ে প্রতিবাদ করায় একাধিক কর্মকর্তাকে বদলি। শুরুতে কেবল আইইডিসিআর’র একার হাতেই করোনা টেস্টের ভার ন্যস্ত। সময়মতো পর্যাপ্ত নমুনা সংগ্রহ কন্টাক্ট ট্রেসিং ও আইসোলেশন সেন্টার নিশ্চিতে ব্যর্থতা।হাসপাতাল, শয্যা, অক্সিজেন সিলিন্ডার কিংবা আইসিইউ নিয়ে ভুল তথ্য প্রদান। সব মিলিয়ে একের পর অভিযোগ জমে পাহাড়ের রূপ ধারণ করে।করোনা পরিস্থিতিতে মাস্ক, গ্লাভস পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ। যাচাই বাছাই না করেই করোনা পরীক্ষার অনুমতি দেয়া। রিজেন্টের সঙ্গে করোনা চিকিৎসার চুক্তি। শাহেদ অপকর্মের কথা জেনেও চুপ থাকা। আবার এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের দিকে অভিযোগ তুলে তোপের মুখে পড়েন তিনি। আর এতেই প্রকাশ্যে আসে করোনা নিয়ে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কাজে সমন্বয়হীনতা।আরো পড়ুনঃ এখনো গৃহীত হয়নি স্বাস্থ্য ডিজির পদত্যাগপত্র জেকেজি কাণ্ডে অধিদপ্তরের অবস্থান ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। একের পর এক অভিযোগ জমা পড়লেও এসব ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেননি ডিজি। স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে।তার সময়কালেই ১৪ টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করে দুদক। এসবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হলেও তা আমলে নেননি তিনি। এরই মধ্য অভিযোগ উঠেছে এসব অনিয়ম তদন্তে দুদককে অসহযোগিতার। বলতে গেলে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে এর হযবরল অবস্থার মধ্যে রেখেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন মহাপরিচালক।বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনাকালে এসে স্বাস্থ্য খাতের যে বেহাল দশা ফুটে উঠেছে তাতে মহাপরিচালকের বিদায়টা যেন অবধারিতই ছিল।স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বে-নজির বলেন, এখন যে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে টানাপোড়েন, এ ধরনের নানা সমস্যা এগুলো সব মিলিয়ে স্বাস্থ্য ডিজি হিসেবে তার দুটি পথ ছিল। হয় তিনি পদত্যাগ করবেন, না হয় তাকে সরিয়ে দেয়া হবে।সেক্ষেত্রে কেবল পদত্যাগ কোনো সমাধান হতে পারে না। দরকার পুরো ব্যবস্থার পরিবর্তন।বিএমএ সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল বলেন, যে ব্যবস্থাপনা, সেই ব্যবস্থাপনার যদি উন্নয়ন করা না যায়, তাহলে শুধু বদলি বা পদত্যাগ করেই উন্নয়ন সম্ভব নয়।২০১৯ সালে এপ্রিলে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চুক্তিতে নিয়োজিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। এর আগে তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের পরিচালক এবং অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের দায়িত্বেও ছিলেন।