কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাসের জাতীয় শোক দিবস পালন

    বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হলে সবাইকে দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে: রাষ্ট্রদূত জসীম

    0
    55

    কান্ট্রি করেসপন্ডেন্ট, (দোহা) কাতার :: বাংলাদেশ দূতাবাস দোহায় আজ ১৫ আগস্ট ২০২১ জাতীয় শোক দিবস এবং স্বধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদত বার্ষিকী যথাযথ মর্যাদা ও ভাব গম্ভীর্যের সাথে পালিত হয়েছে।

    শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সূচনা হয় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে। কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব জসীম উদ্দিন, এনডিসি দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটি কাতারের নেতৃবৃন্দ এবং কাতার প্রবাসীদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ স্কুল, আবু হামুর প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পরর্বতীতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে দূতাবাসের সকল কর্মকতা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এরপর তিনি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে দূতাবাসের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। এসময় বিভিন্ন বাংলাদেশি সংগঠন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন।

    অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা সহ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এর সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত বাণী সমূহ সকলের উদ্দেশ্যে পাঠ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর ভিত্তি করে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়।

    আলোচনা পর্বে কাতারস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর মহান আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগষ্ট শাহাদত বরণকারী সকল সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

    রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন এনডিসি, তাঁর বক্তব্যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বিনির্মানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সহ শাহাদত বরণকারী সকল শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানের মধ্যে তিনটি অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

    তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু তাঁর কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার কারণে খুব অল্প সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে তুলে এনেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শুধু একজন মহান রাষ্ট্রনায়ক বা নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সফল কূটনীতিক। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত স্বাধীনতা পরবর্তী বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুর এই কূটনৈতিক সাফল্য নতুন দেশকে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান করে নিতে সাহায্য করে বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

    তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি সংবিধান বাংলাদেশের জনগনকে উপহার দিয়েছিলেন। যেটি ছিল একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্য বিরাট অর্জন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনের কঠিন কাজে বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময়ের মধ্যে তাঁর কূটনৈতিক প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনের কাজকে অনেকদুর এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।

    তিনি বঙ্গবন্ধুর নিখাঁদ দেশপ্রেম, আত্মবিশ্বাস, সাহস, মানুষের প্রতি ভালোবাসা সবার জন্য অনুকরণীয় বলেও উল্লেখ করেন। প্রবাসী ভাইদেরকে উদ্দেশ্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হলে সবাইকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে যেতে হবে, প্রবাসের আইন কানুন মেনে চলতে হবে। সবাই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করে সোনার বাংলা নির্মাণে সহযোগিতা করলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সফল হবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে কোরআন খানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।