চট্টগ্রামে ভয়ংকর খুনি টেক্সি হাসান’র লাইসেন্স করা অস্ত্র, ব্যবহার হয় অবৈধ কাজে

0
32


বোয়ালখালী প্রতিনিধিঃ
বোয়ালখালীর এক ব্যবসায়ী পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে দেনাদার সন্ত্রাসী হাসানের বৈধ অস্ত্র দিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছে বলে জানা গেছে। এঘটনায় নিরাপত্তা, টাকা আদায়, বৈধ অস্ত্র অবৈধভাবে ব্যবহারে হুমকিতে ঐ অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করার জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে গত ১৫ নভেম্বর মঙ্গলবার বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার সামশুল আলমের পুত্র ও প্রিন্ট প্যাক’র স্বত্বাধিকারী শাহ মোঃ সরোয়ার হোসেন।
অভিযোগ সূত্র জানা যায় গত কিছুদিন পূর্বে
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের পিছনে আম্বিয়া শিরিন ভবনের মৃত শাসশুল আলমের পুত্র মোহাম্মদ হাসান প্রকাশ টেক্সি হাসানের
সাথে সরোয়ার হোসেন এর প্রতিষ্ঠান প্রিন্ট প্যাক এ ২০ মার্চ ২০২২ইং তারিখে তিনি তাহার ব্যক্তিগত কিছু পোষ্টার লিফলেট সহ নানা ধরনের প্রিন্টিং সামগ্রী আমার প্রতিষ্ঠানে অর্ডার করেন। উক্ত কাজের বিল দুই লক্ষ দশ হাজার টাকা। কাজের অগ্রীম পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করেন, ৩১ মার্চ ২০২২ইং তারিখে অর্ডারকৃত প্রিন্টিং সামগ্রীগুলো ডেলিভারী নিয়ে গেলেও তিনি উক্ত কাজের বকেয়া বিল এক লক্ষ ষাট হাজার টাকা পরিশোধ না করে, তাহার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিস ১৬ নং জামালখান আম্বিয়া শিরিন ভবন নিচতলায় বিল বুঝে নেওয়ার অনুরোধ করেন, বেশ কয়েক দফা তার বকেয়া বিল আনতে গেলেও তিনি আজ না হয় কাল, দিব দিচ্ছি এভাবে কাল ক্ষেপন করতে থাকে, এভাবে বেশ কিছুদিন টালবাহানা করার পর গত ৭ নভেম্বর ২০২২ইং তারিখ উক্ত বিল নিয়ে তার অফিসে গেলে সে কিছুক্ষণ ব্যবসায়ী সরোয়ারকে বসিয়ে রেখে আনুমানিক ২০/৩০ মিনিট পর অপরিচিত ৭/৮জন যুবকের দলবল নিয়ে পুনরায় অফিসে আসে। এই সময় তার হাতে কালো রঙের একটি শর্টগান ও একটি পিস্তল প্রদর্শন করে , সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রগুলো সরোয়ারের সামনে টেবিলে রেখে তার সাথে আসা যুবকদের সঙ্গে কোন এক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে। এক পর্যায়ে সরোয়ার পাওনা টাকার কথা বলতেই হাসান আমার উপর প্রচন্ডভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তার সঙ্গে থাকা যুবকদের অস্ত্রসন্ত্র নিয়ে গাড়িতে উঠার নির্দেশ দেয়। যাওয়ার সময় সরোয়ারের পাওনা টাকার ব্যাপারে আর কোনদিন তার অফিস সহ উক্ত এলাকায় না আসতে হুমকি প্রদান করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়-হাসান একজন নিষিদ্ধ ঘোষিত জামাত শিবিরের সন্ত্রাসী, সিরিয়াল খুনি, কিশোরগ্যাং,চাঁদাবাজ, অস্ত্রধারী লোক। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৮/১০ টি খুনসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এছাড়া হাসান সিএমপির তালিকা ভূক্ত সন্ত্রাসী।
হা সানকে ১৯৯৫/১৯৯৬ সালে রাউজানের উত্তর সর্ত্তা গ্রামে টেক্সী ড্রাইভার চিনলেও ১৯৯৭ সালে স্থানীয় যুবলীগ নেতা কাজলকে হত্যা করে চট্টগ্রাম শহরে পালিয়ে আসে। এ দূর্সাহসিকতার এক পর্যায়ে ২০০১সালে চাঞ্চল্যকর নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যা কান্ডে অংশ নেয়। চলতি বছরের ৩১ মার্চ মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন নেছারিয়া মাদ্রাসার সামনে মাদক ব্যবসার কার্যক্রমে লাইসেন্স করা অস্ত্র দিয়ে ৪/৫ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়া ঘটনায় ১ এপ্রিল পাহাড়তলী থানায় সাধারন ডায়েরী দায়ের করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র মজুতদার, একাধিক হত্যাকান্ড, গুলি ছোরা ও গুলি নিয়ে নগরীর সদরঘাটস্থ ডিলাইট আবাসিক হোটেল থেকে পুলিশের হাতে আটক নিয়ে ২০২১ সালে ২৪ জানুয়ারী জাতীয় দৈনিক আমাদের সময়ে ” শিবিরের ক্যাডার এখন আওয়ামীলীগের নিয়ন্ত্রক” শীর্ষক ও ২০১৮ সালে দৈনিক পূর্বকোণে সদরঘাট শাহাজাহান হোটেল থেকে পিস্তল সহ সন্ত্রাসী ইমরান ও শফিউল আজমের স্বীকারে পিস্তল টি হাসান থেকে ভাড়া নেয়ার কথা সম্বলিত সংবাদ প্রকাশিত হয়। ১৯৯৮ সালে ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তৈয়বকে হত্যা উদ্দেশ্যে নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে গুলি করেন হাসান ও তার সহযোগীরা এ খবর বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত হয়। এছাড়া হাসানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অপরাধ মূলকসহ একাধিক অনিয়ম -অপ কর্মকান্ডে জড়িত থাকার তথ্য। ভূক্তভোগি সরোয়ার হোসেনের নিরাপত্তা, পাওনা টাকা আদায় ও সন্ত্রাসী হাসানের বৈধ অস্ত্র অবৈধভাবে ব্যবহারে হুমকি ঘটনা খতিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ ঐ অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর আহবান জানিয়েছেন।