চিকিৎসক-ম্যাজিস্ট্রেট বিতণ্ডা: বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট

    0
    15

    লকডাউনে চলাকালে রাজধানী ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে মুভমেন্ট পাস নিয়ে চিকিৎসক-পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাগ্বিতণ্ডার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসককে হয়রানির অভিযোগ এনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মামুনুর রশিদ ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে বলা হয়েছে।সোমবার (২৬ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিটটি দায়ের করেন।অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, আগামী মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।প্রসঙ্গত, লকডাউনের মধ্যে গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে এলিফ্যান্ট রোডে দায়িত্বরত পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে এক নারী চিকিৎসকের বাদানুবাদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পুলিশ ওই নারী চিকিৎসকের পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে এ বাদানুবাদ হয়।

    সেই নারী চিকিৎসক হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি।আর নিউমার্কেট থানা পুলিশের সহযোগিতায় সেখানে দায়িত্ব পালন করছিলেন ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মামুনুর রশিদ।

    ৫ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ওই নারী চিকিৎসক পুলিশকে বলছেন, ‘করোনায় জীবন গেছে কয়জন ডাক্তারের, আর আপনারা কতজন মরছেন। আমার কাছে আবার চান মুভমেন্ট পাস।’

    এরপরই পাল্টে যায় পরিস্থিতি। পুলিশের এক সদস্য ওই নারীকে বলেন, ‘আপনি আমাদের ধমক দিচ্ছেন কেন?’ জবাবে নারী বলেন, ‘আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলীর মেয়ে।’ পুলিশও বলে, ‘আমিও মুক্তিযোদ্ধার ছেলে। আপনি আমাকে শোনাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধার কথা।’

    এ সময় নিজেকে চিকিৎসক দাবি করা ওই নারী পুলিশকে বলেন, ‘ডাক্তার হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আমি বিএসএমএমইউ প্রফেসর, বীর বিক্রমের মেয়ে। আমাকে আপনারা হয়রানি করতে পারেন না।’ পরে পুলিশের আরেক সদস্য বলেন, ‘আপা আপনাকে তো হয়রানি করা হচ্ছে না। আপনার কাছে পরিচয়পত্র চাওয়া হচ্ছে।’

    এর পরে নিজ গাড়িতে উঠে যান ওই নারী চিকিৎসক। তখন পুলিশের এক সদস্য ওই নারীকে বারবার বলেন, ‘আপনি আমাকে তুই তুই করে বলছেন কেন?’ একপর্যায়ে পুলিশকে আন্দোলনের হুমকি দেন ওই চিকিৎসক। পুলিশ জবাবে বলছে, ‘আমাদের আন্দোলনের ভয় দেখাচ্ছেন।’

    ‘আর আমি কে, সেটা এখন তোদের দেখাচ্ছি হারামজাদা।’ এই কথা বলে এক ‘মন্ত্রীকে’ ফোন করেন তিনি। ফোনে তাকে হয়রানি করার কথা বলেই পুলিশ সদস্যের হাতে তার ফোন তুলে দেন কথা বলার জন্য। তারপরও পুলিশকে পরিচয়পত্র দেখাননি তিনি।এ ঘটনার পর চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেয়।