নির্ধারিত স্থান ছাড়া সিটি করপোরেশন-পৌরসভার টোল আদায় নয়

    0
    11

    সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো নির্ধারিত স্থান ছাড়া সড়কে যত্রতত্র টোল ও ফি আদায় করা করতে পারবে না। রোববার (২০ জুন) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য টাস্কফোর্সের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

    সভা শেষে টাস্কফোর্সের প্রধান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

    তিনি বলেন, ‘ইজারাকৃত জায়গায় স্থানীয় সরকার পরিচালিত নির্ধারিত ফি ও টোল নির্ধারিত স্থান থেকেই আদায় করতে হবে, যত্রতত্র এটা করা যাবে না।’

    সড়কে চাঁদাবাজির বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, বিভিন্ন ধাপে চাঁদা দিতে হয়। এটার সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনও জড়িত- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চাঁদা বাণিজ্যের কথা আমি বলব না, আমি বলবো একটা টোল আছে, সেটা দিতে হবে। সেটা কোথা থেকে নেবে, কীভাবে এবং কত টাকা নেবে সেটা নির্ধারিত হবে। সেই জায়গা ছাড়া এই টোল কেউ নিতে পারবে না।’

    আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘পরিবহনের যে চাঁদা, যেটা মালিক শ্রমিক কিংবা মালিকরা বা শ্রমিকরা নিয়ে থাকে সমিতি চালানোর জন্য সেটাও নির্ধারিত রয়েছে, সেটাও বাস টার্মিনাল বা যেখান থেকে বাস ছাড়ে, এর বাইরে কেউ নিতে পারবে না।’

    ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে দেখা যায়, ঠিকাদারের নামে বিভিন্ন সিগন্যালে রানিং গাড়ি থেকে চাঁদা নেয়া হয়- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমরা জানিয়ে দিচ্ছি, যে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় বসে তাদের জানিয়ে দেবে এ সব চাঁদাবাজি কিংবা যত্রতত্র কালেকশন যাতে না করে নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া।’

    তিনি বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকদের মালিকপক্ষ থেকে নিয়োগপত্র দিতে হবে। সেটা দেয়ার জন্য মালিক ও শ্রমিক পক্ষ আজ উপস্থিত ছিল। তারা দুই পক্ষ নিজেরা বসে এ বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবে।’

    এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা (নিয়োগপত্র) নিয়ে অনেক জটিলতা আছে। আমরা দীর্ঘ আলাপ করেছি। চালক এবং শ্রমিকরা বিভিন্ন সময় জায়গা পাল্টায়। এক মালিক থেকে আরেক মালিকের কাছে চলে যায়। নানান ধরনের কথাবার্তা আসছে। সেজন্য বলে দিয়েছি, দুই পক্ষই বসে শিগগিরই এর ব্যবস্থা করে দিতে। এই ব্যবস্থা না করলে আমরা…সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মহোদয় এখানে আছেন, বিআরটিও ব্যবস্থা নেবে। যাতে করে তারা রেজিস্ট্রেশন করার সময় সেগুলো চেয়ে নেয়, না দেখাতে পারলে রেজিস্ট্রেশন দেবেন না, সে ধরনের একটা কথাবার্তা চলছে।’

    আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘মোটরসাইকেলে তিন-চারজন করে উঠছেন। মাঝে-মধ্যে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন বা দুর্ঘটনার কারণ হয়ে যাচ্ছেন। দুইজনের বেশি মোটরসাইকেলে কেউ উঠতে পারবেন না। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা দুর্ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত টেকনিক্যাল রিপোর্ট আমাদের দেবেন। কোন রাস্তায় কী পরিমাণ গাড়ি চলতে পারে। কীভাবে দুর্ঘটনা কমানো যায়। কী ধরনের মোটরযান হাইওয়ে বা অন্যান্য জায়গায় চলবে। অনিবন্ধিত মোটরসাইকেল রয়েছে। সবাইকে নিবন্ধন করে চালাতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া যাতে কেউ বাইরে বের হতে না পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করব।’

    দুর্ঘটনা তো আগের চেয়ে বেড়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সড়কে যানবাহন বেড়েছে। তবে (দুর্ঘটনা) খুব বেড়েছে বলে রিপোর্ট নেই। তবে দুর্ঘটনা হচ্ছে। দুর্ঘটনা কমানোর জন্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিবেদন দেবেন। সেটা ফলো করার জন্য আমরা রেডি হচ্ছি। দুর্ঘটনা ঘটার অনেকগুলো কারণ আমরা চিহ্নিত করেছি।’

    আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হাইওয়েতে এখন ক্যামেরা ফিট করছি। ক্যামেরার টেন্ডারও হয়ে গেছে। আমরা ঢাকা থেকে চট্রগ্রামের রাস্তাটি পুরোপুরি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তাহলে কীভাবে অ্যাক্সিডেন্ট হলো, কীভাবে কে গাড়ি নামালো সবগুলোই আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আমাদের পুলিশ বাহিনী ওখানে বসে বসে দেখতে পারবে কে কী করছে।’

    সভায় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান, সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদসহ টাস্কফোর্সের অন্যান্য সদস্যরা সশরীরে ও ভার্চুয়ালি সভায় উপস্থিত ছিলেন।