নির্মূল কমিটি বায়েজিদ শাখার ওয়েবিনারে বক্তারা তরুণদের কাছে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ পৌঁছে দিতে হবে

    0
    70

    একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বায়েজিদ থানা-চট্টগ্রাম শাখা আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সংবিধান এবং এর চার মূলনীতি তৈরী হয়েছে। আমরা মিটিং মিছিল আন্দোলন সংগ্রাম অনেক কিছুই করি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত সংবিধানের দর্শনকে কতটুকু উপলব্ধি করি? মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সাড়ে সাত কোটি মানুষ ছিলো। তারা অনেকেই এখন বেঁচে নেই। কোটি কোটি নতুন প্রজন্ম তৈরী হয়েছে। তারা মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উপলব্ধি করে কি?
    তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু দেখলেন বাংলাদেশকে মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে যেতে হবে। তিনি সেভাবেই একটি সংবিধানের রূপরেখা প্রণয়ন করলেন। বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে, মানবিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে আমাদের ৭২-এর সেই সংবিধানে ফিরে যেতে হবে এবং তরুণদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ পৌঁছে দিতে হবে।
    ওয়েবিনারে প্রধান আলোচক সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীর এই সময়ে বিভিন্ন কারণে শহীদজননী জাহানারা ইমামের আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা আরো বেড়েছে। আগামীর বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলার জন্য আন্দেলনের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি জাতির পিতার আদর্শ এবং ৩০ লক্ষ শহীদের স্বপ্ন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে অব্যাহত রাখতে হবে। মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস নির্মূলের নির্দেশ রয়েছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনে। বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী পালনের ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমাদের প্রধান কাজ হবে দেশ ও বিদেশে বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ মানবতার দর্শন নানা মাত্রিকতায় তুলে ধরা।
    আজ ৫ আগস্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বায়েজিদ থানা চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি প্রফেসর ড. মোজাহেরুল আলমের সভাপতিত্বে ও জেলা যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবু সাদাত মোঃ সায়েমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল। প্রধান আলোচক ছিলেন কেন্দ্রীয় ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শওকত বাঙালি। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাাদিক-গবেষক আলী আকবর টাবী।
    আলোচনায় অংশ নেন-সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলা সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈন উদ্দীন, কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক অলিদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম খান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ সাহাব উদ্দিন, সদস্য সাইফুদ্দিন শান্ত, মোহাম্মদ হাসান, আকতার হোসেন, বায়েজিদ থানা-চট্টগ্রাম শাখার সহ-সভাপতি শামীম আরা খানম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মুহাম্মদ রোকনুজ্জমান, প্রচার সম্পাদক এসএম ইমরান হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী সুমন।
    এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলার মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নারীনেত্রী রুবা আহসান, আবু তৈয়ব সোহেল, আব্দুল কাদের, শাহী ইমরান রাজু, মুহাম্মদ আকতার হোছাইন, জামাল উদ্দীন, মেহেরাজ তুহিন, মমতাজ বেগম প্রমুখ।
    ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন ‘৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার জন্য ‘৭১-এর মত গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ একটি চলমান প্রক্রিয়া। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে যারা যুদ্ধ করবে তারা এ প্রজন্মের ‘মুক্তিযোদ্ধা’ আর বিপক্ষে যারা অপতৎপড়তা চালাবে তারা ‘রাজাকার’।
    বক্তারা সকলকে বাহাত্তরের সংবিধান অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।