মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার রায় ৩১ জানুয়ারি

    0
    11

    অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদের হত্যা মামলার যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি এ মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করেছেন আদালত। বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।

    এর আগে বুধবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ১০ টায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামি ওসি প্রদীপের আইনজীবীর অসমাপ্ত যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে চতুর্থ দিনের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

    আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণে রেড জোনে ঢাকা ও রাঙামাটি: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

    বিচারিক কার্যক্রমের যুক্তি-তর্ক পর্বের তৃতীয় দিনে প্রধান আসামি লিয়াকত আলীর আইনজীবীর পর ওসি প্রদীপের আইনজীবী আসামির স্বপক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করলেও আদালতের কার্যদিবসের নির্ধারিত সময়ে তা অসমাপ্ত ছিল। 

    এর আগে সকাল সাড়ে নয়টায় প্রিজন ভ্যানে করে মামলার ১৫ আসামিকে কক্সবাজার কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।

    পিপি ফরিদুল বলেন, বুধবার সকালে যুক্তি-তর্ক পর্বের শেষ দিনে সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপের আইনজীবী রানা দাশগুপ্তের অসমাপ্ত বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আসামিপক্ষের যুক্তি খণ্ডন করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।

    ‘’এ নিয়ে আশা করা যায়, আজকে (বুধবার) আদালতের কার্যদিবসের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিচারিক কার্যক্রমের যুক্তি-তর্ক পর্বে ইতি টানা সম্ভব হবে। আর এটা সম্ভব হলেই আদালত রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করে নির্দেশ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

    যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে চলতি মাসের শেষের দিকে সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ প্রধান কৌশুলী।

    এর আগে যুক্তি-তর্ক পর্বের প্রথম দিন রোববার ৬ জন আসামির এবং দ্বিতীয় দিন সোমবার ৭ জন আসামির আইনজীবী নিজেদের স্বপক্ষে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। দ্বিতীয় দিনে প্রধান আসামি লিয়াকত আলীর আইনজীবী যুক্তি-তর্ক পর্বে অংশগ্রহণ করলেও বক্তব্য প্রদান অসমাপ্ত ছিল। তৃতীয় দিনে তার (লিয়াকত) আইনজীবীর বক্তব্য শেষ করার পর আসামি ওসি প্রদীপের আইনজীবী যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শুরু করেন। কিন্তু আদালতের কার্যদিবসের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা শেষ করা সম্ভব হয়নি।

    মামলার বিচারিক কার্যক্রমে ৮ দফায় গত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তাদের জেরা শেষ হয়েছে। 

    সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা সম্পন্ন হওয়ার পর কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় আসামিদের বক্তব্য গ্রহণ করেছিল আদালত। একইসঙ্গে গত ৯ জানুয়ারি  থেকে আজ ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তি-তর্কের জন্য দিন ধার্য করেছিল আদালত।

    প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা দায়ের করে। পরে ওই বছর ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব।

    পরে ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম। এতে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে। গত ২৭ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়। এরপর গত ২৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। যা শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। পরে গত ৬ ও ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে আসামিদের ৩৪২ ধারায় বক্তব্য গ্রহণ।