যুদ্ধের মধ্যে দুই মাস ধরে পানিবন্দি ইউক্রেনের একটি গ্রাম 

    0
    14

    গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরু করে। এর পর রুশ বাহিনী কিয়েভের কাছে একটি বন্যা রক্ষা বাঁধে হামলা চালালে বাঁধটি ভেঙে পার্শ্ববর্তী গ্রাম প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দেয়। দুই মাস পেরিয়ে গেলেও বন্যার কবল থেকে রক্ষা পায়নি সেই গ্রামের মানুষজন। 

    রোববার বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

    গ্রামটির নাম দেমিদিভ। গ্রামপ্রধান ওলেক্সান্ডার মেলনিচেঙ্কো এএফপিকে বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রুশ বাহিনী বাঁধ এবং একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে বাঁধ ভেঙে দেমিদিভ গ্রামে পানি প্রবেশ করে।’ 

    ওলেক্সান্ডার মেলনিচেঙ্কো আরও জানান, তখন রুশ বাহিনী কিয়েভ দখলের জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছিল। তাদের অগ্রযাত্রাকে আটকে দিতে ইউক্রেন সেনারা দেমিদিভ গ্রামের পাশের ইরপিন নদীর ওপরের একটি সেতু উড়িয়ে দেয়। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। কারণ সেতু বিধ্বস্ত হওয়ার ফলে নদীর পানি গ্রামে প্রবেশ করে। 

    সেতুটি ছিল দেমিদিভ গ্রাম ও কিয়েভের মধ্যে সংযোগকারী সেতু। সেতু পেরিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রাসাদে যেতে মাত্র এক ঘণ্টা সময় লাগে। মেলনিচেঙ্কো বলেন, ‘সেতুটি উড়িয়ে দেওয়ার কারণে রুশ সৈন্যরা বাধ্য হয়ে অন্যদিকে মোড় নেয়।’ 

    সেতুটি উড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কিয়েভ কর্তৃপক্ষ বাঁধও খুলে দিয়েছিল বলে জানান ওলেক্সান্ডার মেলনিচেঙ্কো। তিনি বলেন, ‘বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে নদীর পানি ৩০ সেন্টিমিটার বেড়ে গিয়েছিল।’ 

    এর পর প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেছে, কিন্তু গ্রাম থেকে বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যায়নি। গ্রামটিতে আনুমানিক ৭৫০টি পরিবার বাস করে। এদের মধ্যে ৬০টি পরিবার বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০০ পরিবার। 

    কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রকৌশলীরা ইতিমধ্যেই ইরপিন নদী পার হওয়ার সেতুটি মেরামত করতে শুরু করেছেন। আগামী শনিবার থেকে সেতুটি গাড়ি চলাচলের উপযোগী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে বলে ধারণা করছেন কিয়েভ কর্তৃপক্ষ।