রাতেই পাল্টে গেল চিত্র, কাদের মির্জার শোডাউন

0
35

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে এক রাতের মধ্যেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। গত মঙ্গলবার সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর শুক্রবার (১২ মার্চ) সকালে প্রথমবারের মতো পৌর ভবন থেকে বেরিয়ে অনুসারীদের নিয়ে পৌর এলাকায় শোডাউন করেছেন কাদের মির্জা। এরপর তিনি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। _Eঅনেকেই বলছেন, বৃহস্পতিবার তার নেতাকর্মীদের মধ্যেও কাদের মির্জা গ্রেফতার হতে পারেন বলে গুঞ্জন ছিল। স্ত্রী ও আইনজীবী পৌর ভবনে গিয়ে কাদের মির্জার সঙ্গে দেখা করেও এসেছিলেন। গ্রেফতার হতে পারেন বলে তিনিও মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু এক রাতের ব্যবধানে পাল্টে গেছে চিত্র। কাদের মির্জার বিরুদ্ধে কোনো মামলা রেকর্ড না করা এবং বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা নেয়ার নেপথ্যে কী আছে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চলছে।_এদিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ.লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদলকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। এছাড়াও নতুন করে মুছাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও মির্জা সমর্থক ইকবাল চৌধুরীসহ আরও ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আ.লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদলকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১নং আমলি আদলতে হাজির করে পুলিশ। আদালতের বিচারক সোয়েব উদ্দিন খান শুনানি শেষে বাদলকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।_জানা গেছে, মঙ্গলবার আ.লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে বসুরহাট পৌরভবনে অবস্থান নেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। শুক্রবার সকালে বৃহস্পতিবার বিকেলে নোয়াখালী প্রেসক্লাব এলাকা থেকে আ.লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদল গ্রেপ্তারের পর পুলিশ, র‌্যাব সদস্যরা বসুরহাট পৌরসভার বাহিরে অবস্থান নেন। ভবনটি নজরধারীতে রাখেন গোয়েন্দা সংস্থ্যার সদস্যরা। রাতভর ব্যাপক উত্তেজনার পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌর ভবন থেকে কয়েকজন পৌর কর্মচারীসহ বের আসেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।কর্মচারীদের নিয়ে বসুরহাট বাজার ঘুরে পুনরায় দুপুরে পৌরভবনের তৃতীয় তলায় নিজের কক্ষে যান মির্জা। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আবারও বের হয়ে আসেন আবদুল কাদের মির্জা। এ সময় তিনি তার কয়েকজন সমর্থকদের নিয়ে বাজারের বিভিন্ন অলিগলিতে ঘুরে শো-ডাউন করেন। এ খবর লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) তিনি পৌর ভবনের ভিতরে অবস্থান করছেন। পৌর ভবনের বটতলা দিনভর কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। নিহত আলা উদ্দিনের ছোট ভাই এমদাদ অভিযোগ করে বলেন, আমার ভায়ের হত্যার ঘটনার এজাহারে আবদুল কাদের মির্জাকে প্রধান আসামী করায় পুলিশ আমার মামলাটি রেকর্ড করেনি। এরমধ্যে পুলিশ এজাহার থেকে কাদের মির্জার নাম বাদ দিতে আমাকে চাপ দেয়। কিন্তু কোন চাপের কাছে আমি নত হবো না। আমি শনিবার আদালতে গিয়ে সেখানে মামলা করবো।এদিকে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নিজ বাড়িতে মিজানুর রহমান বাদলের মুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বাদলের মা আরা ধনী বেগম, স্ত্রী সেলিনা আক্তার কাকুলি, বোন ফাতেমা আক্তার বকুল ও আমেনা বেগম।কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি জানান, সংঘর্ষে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মুছাপুর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ইকবাল চৌধুরীসহ নতুন আরও ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এনিয়ে পৃথক মামলায় ৩৫জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে বসুরহাট রূপারী চত্বর থেকে ৭টি ককটেল ও ২৬টি গাবের লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। টহলে আছে র‌্যাব সদস্যরা।