সীমান্তের ৭ জেলা নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার, আসছে কঠোর নির্দেশনা

0
17

সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলা এখন করোনার সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে। ফলে ওই জেলাগুলোতে লকডাউনের মতো সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী ২৪ মে রাত থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় লকডাউন দেওয়া হয়েছে, যা এখনো চলছে। এরপর গত ৩১ মে ঝুঁকিপূর্ণ সাত জেলাকে লকডাউনের আওতায় আনতে সুপারিশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটি। ওই সাত জেলা হলো- রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোর। এ ছাড়া নোয়াখালী ও কক্সবাজারের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে কমিটি।এর মধ্যে সাতক্ষীরা ও নোয়াখালী জেলায় পুরোপুরি এবং নওগাঁ ও কক্সবাজারের পাঁচ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আংশিক লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। তবুও ঠেকানো যাচ্ছে না আক্রান্ত-মৃত্যুর হার।এমন অবস্থায় দেশে চলমান ‘লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে। নতুন প্রজ্ঞাপনে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বিধিনিষেধ কঠোর হতে পারে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাব এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আছে। অনুমোদনের পর রোববার (৬ জুন) দুপুরেই ‘লকডাউন’ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।আগামীকাল সোমবার (৭ জুন) থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত এ ‘লকডাউন’ বাড়তে পারে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারতীয় করোনা ভাইরাসের ধরন ছড়িয়ে যাওয়ার সীমান্তবর্তী সাত জেলার বিষয় উদ্বিগ্ন সরকার। সেসব জেলায় কীভাবে লকডাউন আরও কার্যকর করা যায়, সেটা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশনা থাকবে প্রজ্ঞাপনে। টানা পাঁচ সপ্তাহ মৃত্যু নিম্নমুখী থাকার পর গতকাল শেষ হওয়া সপ্তাহ থেকে মৃত্যুতেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে ২৫ শতাংশের বেশি। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১২ জন মারা গেছেন রাজশাহীতে। এই সময়ে ঢাকাতেও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।বিভাগ হিসাবে মৃত্যু বেড়েছে রাজশাহীতে। আগের সপ্তাহের তুলনায় রাজশাহীতে মৃত্যু বেড়েছে ৫৫ শতাংশ। খুলনা বিভাগে প্রায় ৪২ শতাংশ মৃত্যু বেড়েছে। আর ঢাকা বিভাগে মৃত্যু বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। এদিকে, ‘লকডাউনের বিষয়ে মেয়র ও স্থানীয় এমপিরা, জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জনরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বলেছিলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনের প্রস্তাব স্থানীয় পর্যায় থেকে এসেছিল। আমরা তাদের প্রস্তাবে সায় দিয়েছি। অন্যদেরও আমরা বলে দিয়েছি, যেখানে জরুরি প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার সেটা তারা নিতে পারবেন।’চলতি বছর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা লকডাউন হলেও সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার। পরে সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। তবে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ এবং ট্রেন চলাচল ঈদ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। পরে ২৪ মে থেকে গণপরিবহন চলার অনুমতি দেওয়া হয়।