মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিচার চেয়ে যাবেন সাগরের মা

0
6

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন করা হয় সাংবাদিক সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনিকে। ঘটনার পর দিন রুনির ভাই শেরেবাংলা থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ৯ বছরেও বিচার হয়নি সাংবাদিক এ দম্পতি হত্যাকাণ্ডের। এ পর্যন্ত ৭৮ বার সময় নিয়েও আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। প্রিয়জনের খুনিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় ক্ষুব্ধ স্বজনহারা পরিবার। মামলার বিচার নিয়েও সন্দিহান তারা। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানালেন, ডিএনএ টেস্টের রেজাল্ট আর তদন্ত প্রতিবেদনের জন্যই বিচার শুরু করা যাচ্ছে না চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারকাজ। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে তদন্তকারী সংস্থার প্রতি আহ্বানও জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে সে সময় রাজপথে নামে পরিবার ও গণমাধ্যমকর্মীরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা পূরণ হয়নি গত ৯ বছরে। এর মধ্যে তদন্তভার পুলিশ থেকে র‌্যাবের কাছে স্থানান্তর হয়েছে। তবে হয়নি তদন্তের অগ্রগতি। এমন অবস্থায় ছেলে ও পুত্রবধূর খুনিদের বিচার নিয়ে সন্দিহান সাগরের হতভাগ্য মা।ওই দিনের ঘটনায় নিহত সাগর সরওয়ারের মা সালেহা মনির জানান, মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ৭৮ বার পেছনোর এমন ঘটনা যত বারই ঘটুক না কেন, তিনি সন্তান ও পুত্রবধূর হত্যার বিচারের আশা ছাড়বেন না। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার তিনি চেয়েই যাবেন।এদিকে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটির বিচার শুরু না হওয়া হতাশ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীও। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনেও আলোচিত এ মামলার বিচারকাজ শুরু না হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবুর কাছেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কেনো এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া যাচ্ছে না। হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু না পাওয়া যাওয়া নিয়েও তার মনে প্রশ্ন রয়েছে। ডিএনএ টেস্টের জন্য দেশের বাইরে যে নমুনা পাঠানো হয়েছে তার ফলও এখনও আসেনি। রাষ্ট্রের এই আইনজীবী যত দ্রুত সম্ভব এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে বিচারকাজ শুরু করা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন।সর্বশেষ গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত থেকে ৭৮ বারের মতো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে সময় নিয়েছে তদন্ত সংস্থা র‌্যাব। আগামী ১১ মার্চ প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে হাইকোর্ট আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তকাজ শেষ না হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে তলব করেন। সে সময় ক্ষোভ জানিয়ে উচ্চ আদালত প্রশ্ন রেখেছিলেন অনন্তকাল ধরে কি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলবে?