মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা এত খারাপ যে, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে: ফখরুল

    0
    12

    সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মানুষের হতাশা ‘চরম পর্যায়ে’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাজধানীর বাড্ডায় রাইড শেয়ার চালকের বাইক পুড়িয়ে ফেলার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার বিকেলে এক দলীয় সভায় বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

    তিনি বলেন, তারা (সরকার) অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, তারা আজ পুরোপুরিভাবে একটা লুটেরা অর্থনীতি তৈরি করেছে, একটা লুটেরা সমাজ তৈরি করছে। করোনার কারণে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা এত খারাপ হয়েছে যে, গতকাল (সোমবার) এক যুবক তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে।

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, সে (বাইকচালক) বলছে যে, আমি একটা সিরামিকসের দোকান করতাম। সেটা করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সঞ্চিত অর্থ দিয়ে একটা মোটরসাইকেল কিনে রাইড শেয়ারিং করছি। সেখানে আমাকে পদে পদে বাধা দেওয়া হচ্ছে, অমুক সার্টিফিকেট লাগবে, তমুক সার্টিফিকেট লাগবে। তার চাইতে পুড়িয়ে ফেলি। এটা কখন হয়? যখন হতাশার চরম পর্যায় গিয়ে পৌঁছে মানুষ। আজ সেই অবস্থায় গিয়ে আমরা পৌঁছেছি।

    মির্জা ফখরুল বলেন, এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের লক্ষ্য ছিল এখানে একটা বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা এবং একই সঙ্গে এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখা যেটা আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মূল কথা ছিল সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

    তিনি বলেন, এগুলোর জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হবে, লড়াই করতে হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই লড়াইয়ে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমাদের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের লক্ষ্য এটা হওয়া উচিত যাতে করে আমরা সেদিকে যেতে পারি।

    আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমাদের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।

    মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের যে স্বপ্ন ছিল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সেটাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন বহুদলীয় গণতন্ত্র নেই, একটা মুখোশ আছে, একটা আবরণ আছে গণতন্ত্রের। সেই আবরণের মধ্যে পুরোপুরি একদলীয় ব্যবস্থা চলছে। এখানে একটা ভয়ভীতির সংস্কৃতি এমনভাবে তৈরি হয়েছে যে, এখন কথা বলতে যে কেউ ভয় পায়, লিখতে ভয় পায়, সাংবাদিকরা লিখতে ভয় পায়।

    বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখের ওপরে মামলা, গ্রেফতার, পুলিশি নির্যাতনে তারা এলাকায় থাকতে পারছে বলেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই দেশকে কি একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যাবে? যাবে না। একটা অস্বস্তিকর অবস্থা এরা তৈরি করেছে।

    গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি ও বিষয়ভিত্তিক কমিটির এই সভা হয়। জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সভায় স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তীর বছরব্যাপী কর্মসূচি ফের শুরুর বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

    সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আামান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, ফরহাদ হালিম ডোনার, বিজন কান্তি সরকার, অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, আবদুল হাই শিকদার, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জয়নাল আবেদীন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, আশরাফউদ্দিন উজ্জ্বল, আমিনুল হক, জহিরউদ্দিন স্বপন, মনীষ দেওয়ান, মার্শেল এম চিরমা, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের এবিএম আবদুর সাত্তার, রিয়াজউদ্দিন নসু ও প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।