পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঈদুল আজহা উপলক্ষে পৃথক বাণীতে দেশবাসীসহ বিশ্বের সকল মুসলিমকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান তারা।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘কোরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়।’
তিনি বলেন, মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। ‘আজহা’ অর্থ কোরবানি বা উৎসর্গ করা। ঈদুল আজহা উৎসবের সাথে মিশে আছে চরম ত্যাগ ও প্রভুপ্রেমের পরাকাষ্ঠা। মহান আল্লাহর নির্দেশে স্বীয় পুত্র হযরত ইসরাইল (আঃ) কে কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, অবিচল আনুগত্য ও অসীম আত্মত্যাগের যে সুমহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা ইতিহাসে অতুলনীয়।
আবদুল হামিদ বলেন, এ বছর এমন একটা সময়ে ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চরমভাবে বিপর্যস্থ। করোনার কারণে দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকা আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। জীবন বাঁচানো প্রথম অগ্রাধিকার হলেও জীবন বাঁচিয়ে রাখতে জীবিকার গুরুত্বও অনস্বীকার্য।
কঠিন এ সময়ে তিনি দেশের আপামর জনগণের প্রতি কোরবানির মর্মার্থ অনুধাবন করে সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হয়ে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। একই সাথে তিনি দেশবাসীর প্রতি যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে ঈদুল আজহা উদযাপনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা সবার জন্য বয়ে আনুক কল্যাণ, সবার মধ্যে জেগে উঠুক ত্যাগের আদর্শ।
অন্যদিকে নিজ শুভেচ্ছা বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে প্রিয়বস্তুকে উৎসর্গ করার মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি লাভের যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তা বিশ্ববাসীর কাছে চিরকাল অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবে। প্রতিবছর এ উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে সচ্ছল মুসলমানগণ কোরবানিকৃত পশুর গোশত আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুঃখীর মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে মানুষে-মানুষে সহমর্মিতা ও সাম্যের বন্ধন প্রতিষ্ঠা করেন। শান্তি সহমর্মিতা, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দেয় ঈদুল আজহা।
আমরা এক সংকটময় সময়ে ঈদুল আজহা উদ্যাপন করছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস সমগ্র বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। আমাদের সরকার এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা জনগণকে সকল সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রেখেছি।’
তিনি বলেন, আল্লাহ বিপদে মানুষের ধৈর্য পরীক্ষা করেন। এসময় সকলকে অসীম ধৈর্য নিয়ে সহনশীল ও সহানুভূতিশীল মনে একে অপরকে সাহায্য করে যেতে হবে। এই বিপদের সময় স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী, সশস্ত্রবাহিনী, সাংবাদিক, ব্যাংকার ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ যারা জীবন বাজি রেখে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন তাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী এই মহামারিতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘পাশাপাশি আমরা যেন ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করি এবং আল্লাহ তায়ালার দরবারে বিশেষ দোয়া করি যেন এই সংক্রমণ থেকে আমরা সবাই দ্রুত মুক্তি পাই।