বর্তমান সরকারের পতনের অবস্থা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, এখন একটু জোরে ধাক্কা দিলেই কিনারায় পড়ে যাবে। সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে। দেউলিয়া কীভাবে, তা পত্রপত্রিকায় দেখা যাচ্ছে।
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আজ শনিবার বিকেলে এক সমাবেশে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন। মাওলানা ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই যৌথ সমাবেশের আয়োজন করে রাষ্ট্রচিন্তা, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, ছাত্র যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ ও গণসংহতি আন্দোলন।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এই সরকার যাদের নিয়ে চালায়, তারা হাজার কোটি টাকা লুট করছে। সরকারের মন্ত্রীরাই বলছে, সরকারের আমলারা লুট করছে। আমলারা তো লুট করবেই। যারা রাতের আঁধারে জনগণের ভোট লুট করে এই সরকারকে বসিয়েছে, তারা তো লুট করবেই।’
এককেন্দ্রিক সরকার কখনো মানুষের মুক্তি আনতে পারে না উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জনগণের কাছে সরকারকে নিতে হবে। ঢাকার সরকারের পতন ঘটিয়ে বহুকেন্দ্রিক সরকার করতে হবে। এককেন্দ্রিক সরকার কখনো মানুষের মুক্তি আনতে পারবে না। এর জন্য সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। মাওলানা ভাসানীর বাণী, ‘যত দিন না পর্যন্ত সবার মুখে খাবার না আসবে, তত দিন আমরা থামব না। সবার মুখে খাবার দিয়েই আমরা থামব।’ এই অবস্থা পরিবর্তনের জন্য একত্র হতে হবে।
বর্তমান সরকার জনগণের ভবিষ্যতকে বিপদে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বকারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এই সরকার দেশের, জনগণের ভবিষ্যতকে বিপদে ফেলছে। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন দরকার। জনগণ যেন কথা বলতে না পারে, এ জন্য তাদের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। পুলিশ–প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে। এর কারণ এই সরকার জনগণকে ভয় পায়।
ভোটারবিহীন সরকার দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক বলেন, এই সরকার মুখে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা বললেও তারাই সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশে বিভাজিত রাজনীতি করছে। দেশকে একটি সাম্প্রদায়িকতার সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যাকে–তাকে জামায়াত–শিবির বলে ট্যাগ দিচ্ছে। নুরুল হক বলেন, এই সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা নেই। মাওলানা ভাসানী বলেছেন, ‘পিন্ডির জিঞ্জির ছিন্ন করেছি, দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়।’ কিন্তু এই সরকার দিল্লির দাসত্ব করেই ক্ষমতায় টিকে আছে।
রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য হাসনাত কাইয়ূম বলেন, বাংলাদেশ ভয়াবহ এক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সময়ে মাওলানা ভাসানীকে খুব দরকার। ভাসানী যেকোনো বিভাজনের বাইরে গিয়ে রাজনীতি করতেন, রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতেন। বাংলাদেশ এ রকম সমাধানের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।
সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব রাশিদুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আক্তার, ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রাশেদ খান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আবদুর রহমান প্রমুখ।