করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্লাজমা থেরাপি নিয়েছেন। প্লাজমা থেরাপি নেয়ায় খুব ভালো কার্যকারিতা লক্ষ্য করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি ম্যাজিকের মতো কাজ করে। নিজে এটা নিয়ে তা বুঝতে পারছি। প্লাজমা থেরাপি নেওয়ার পর চাঙ্গা হয়ে উঠেছি।’
ফলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এখন প্লাজমা ব্যাংক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘প্লাজমা থেরাপি সব করোনা রোগীর পাওয়া দরকার। শুধু আমরা কয়েকজন সুবিধা পাবো, আর দেশের অন্যরা বঞ্চিত থাকবে, তা হতে পারে না।’জাফরুল্লাহ চৌধুরী বৃহস্পতিবার (২৮ মে) বিকালে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে গিয়ে প্লাজমা থেরাপি নেন।
এর আগে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শরীরে নোভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি নিজেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট দিয়ে পরীক্ষা করে তার করোনা শনাক্ত হয়।সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানানো হয়, বুধবার (২৭ মে) পিসিআর টেস্টের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বিএসএমএমইউ) নমুনা দিয়েছিলেন প্রবীণ এই চিকিৎসক। ওই নমুনায়ও তার করোনা শনাক্ত হয়। বর্তমান তিনি সুস্থ, স্থিতিশীল আছেন।এদিকে প্লাজমা ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, সব মানুষকে এ সুবিধা দেওয়া আকাশকুসুম কল্পনা না। এটা বাস্তব। প্লাজমা থেরাপি নিয়েই বুঝতে পারি, করোনা রোগের জন্য এটা অত্যন্ত কার্যকর। এখন প্লাজমা ডোনেট করার জন্য দেশের মানুষকে বোঝাতে হবে। যদি সবাই মিলে উদ্যোগ নেওয়া, বোঝানো হয়, তাহলে যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে গেছেন ও শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে, তারা খুব সহজে ডোনেট করতে পারবে। আমাদেরকে এটাই এখন মানুষকে বোঝাতে হবে।’জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এটার জন্য কিছু সরঞ্জামও লাগবে। আমরা এখন উদ্যোগ নিচ্ছি। প্রফেসর ডা. মহিউদ্দিন খান ঢাকা মেডিকেলে কাজ করছেন। শিশু হাসপাতালে কাজ করছেন ডা. হারুন। এটা অত্যন্ত মহৎ কাজ। তারা অত্যন্ত মহৎ কাজ করছেন। তাদের সেই কাজের অংশ হিসেবেই আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে একটি “প্লাজমা ব্যাংক” গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি।’গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ শওকত আলী আরমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ আজ (শুক্রবার) সকালে আমাদেরকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। বর্তমানে গরীব সামর্থ্যহীন মানুষের পক্ষে প্লাজমা থেরাপি নেয়া প্রায় অসম্ভব। মূলত তাদের কথা মাথায় রেখেই প্লাজমা ব্যাংক করা হচ্ছে। দরিদ্ররা যেন প্লাজমা থেরাপি নিতে পারে সেটাই প্রধান লক্ষ্য।তিনি বলেন, এই থেরাপি দেওয়াটাও ঝুঁকিপূর্ণ। সামান্য ভুলে রোগীর বড় বিপদ হতে পারে। তাই আমরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সেবা দেওয়ার জন্য এই ব্যাংক গড়ে তুলছি। এর জন্য কিছু সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। এ ছাড়া আরও যা যা প্রয়োজন সব করা হবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে।