স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলীয় অঞ্চলের ৩৪ জন জলদস্যু আত্মসমর্পন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) চট্টগ্রামের বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তারা আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণের সময় তারা নিজেদের ব্যবহৃত দেশি-বিদেশি ৯০টি অস্ত্র ও ২ হাজার ৫৬ রাউন্ড গুলি ও কার্তুজ জমা দেন।
হত্যা ও ধর্ষণ মামলা ছাড়া এসব জলদস্যুদের বিরুদ্ধে চলমান বিভিন্ন মামলা আইনি প্রক্রিয়ায় প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব। এ সময় জলদস্যুরা অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চেয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
র্যাব জানায়, যারা আত্মসমর্পন করেছে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে র্যাবের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা করা হবে। যারা এখনো আত্মসমর্পণ করেননি তাদের আইনের আওতায় আনতে র্যাবের ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুরা হচ্ছেন, বাইশ্যা বাহিনীর আব্দুল হাকিম ওরফে বাইশ্যা ডাকাত (৫২), আহামদ উল্লাহ (৪২) ও আব্দুল গফুর ওরফে গফুর (৪৭)। ফুতুক বাহিনীর দিদারুল ইসলাম ওরফে পুতিক্যা (৩২), জসিম উদ্দিন (২৬) ও মিজানুর রহমান (২৩)। খলিল বাহিনীর আব্দুর রহিম (৬৪) ও মাহমুদ আলী প্রকাশ ভেট্টা।
বাদল বাহিনীর ওবায়দুল্লাহ (৩৬), রমিজ বাহিনীর ইউনুছ (৫৬), দিদার বাহিনীর তৌহিদ ইসলাম (৩৪), বাদশা বাহিনীর নিজাম উদ্দিন ভান্ডারী, ইউনুস (৫১), কামাল উদ্দিন (৪৭), কাদের বাহিনীর আব্দু শুক্কুর (২৮)।
জিয়া বাহিনীর সাহাদাত হোসেন দোয়েল (৪১), পারভেজ (৩৩), নাছির বাহিনীর নাছির (৫১), আমির হোসেন (৪৮), সাকের (৪০)। কালাবদা বাহিনীর সেলিম বাদশা (৩৪), আব্দুল গফুর ওরফে গফুর, আবু বক্কর সিদ্দিক (৩১), মামুন মিয়া (২৭)।
অন্যান্য দস্যুবাহিনীর আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাইশ্যা (২৯), বেলাল মিয়া (৩০), আব্দুল হাকিম ওরফে বাককু (৩৫), রশিদ মিয়া (৩৬), ইসমাইল (২৪), শাবউদ্দিন ওরফে টুন্নু (৩২), ফেরদৌস (৫২), রেজাউল করিম (৪০), ইউনুচ (৪২) ও মন্জুর আলম (৪২)।
গত কয়েকবছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের ফলে কোনঠাসা হয়ে পড়ে জলদস্যুরা। টিকতে না পেরে তারা বেছে নিতে শুরু করে আত্নসমর্পণের পথ।
২০০৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত র্যাব চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৪৮ জন জলদস্যুকে আটক করে। তাদের থেকে ৭৯৭টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৮৮৪২ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ২০১৮ সালে ৪৩ জন জলদস্যু র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে।