আইফোন ১৫, কিন্তু চীনা কর্মকর্তাদের জন্য নিষিদ্ধ হলো কেন 

    0
    13

    চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আইফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

    গত বৃহস্পতিবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তাদের অ্যাপলের ডিভাইসগুলো ব্যবহার না করতে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। পরদিন শুক্রবার ব্লুমবার্গ তাদের প্রতিবেদনে দাবি করে, এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে সরকার-সমর্থিত সংস্থাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত সব সংস্থা। ফলে সরকারের নিয়ন্ত্রিত সব সংস্থাই এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসছে। ফলে এই নিষেধাজ্ঞার পরিধি বেশ বিস্তৃত

    চীনের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের চলমান বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত যুদ্ধের সর্বশেষ ‘তোপধ্বনি’ বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে এ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

    এরই মধ্যে ১২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় নতুন পণ্য আইফোন ১৫সহ অন্যান্য পণ্যের উন্মোচন অনুষ্ঠান আয়োজন করে মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান অ্যাপল।

    যদিও অ্যাপলের জন্য এটা খারাপ খবর ও পশ্চিমা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এটি সম্ভাব্য অশুভ লক্ষণ, তবে এই নিষেধাজ্ঞা চীনের কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখা পর্যবেক্ষকদের মোটেও বিস্মিত করেনি।

    যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয় দেশই একে অপরের ওপর অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। কেননা উভয় পক্ষই বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কথিত জাতীয় নিরাপত্তার নিয়ে উদ্বেগকে দিন দিন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

    বেইজিং বিদেশি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি সেনজেন-ভিত্তিক হুয়াওয়েসহ দেশীয় সংস্থাগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় জোর দিয়েছে। হুয়াওয়ের নতুন ১ হাজার ২০০ ডলারের ‘মেট ৬০ প্রো’কে প্রযুক্তি-বিশ্লেষকেরা অনেকটাই এগিয়ে রেখেছেন। আইফোনের সঙ্গে নতুন এই গেজেটের দৌড়কে অগ্রাহ্য করা যাচ্ছে না।
    মেট ৬০ প্রো-এর বাজারে নিয়ে আসার সময় আইফোনকে নিষিদ্ধ করার সময় মিলে যাওয়াকে ‘কৌতূহলোদ্দীপক’ বলে মন্তব্য করেছে ব্যাংক অব আমেরিকা।

    চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের দেশের প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সুরক্ষাসংক্রান্ত সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছে। তাদের আশঙ্কা, সংবেদনশীল ডেটা হাতিয়ে নেওয়াসহ সরকারি অবকাঠামোতে হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটতে পারে।

    গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অঙ্গরাজ্য হিসেবে মন্টানা চীনের মালিকানাধীন টিকটক নিষিদ্ধ করে। তথ্যের গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগের ভিত্তিতে তারা এমন পদক্ষেপ নেয়। আরও কয়েকটি অঙ্গরাজ্য একই রকম পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে।

    যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোসহ অনেক রাজ্য সরকারই এরই মধ্যে সরকারিভাবে ইস্যু করা ফোনে টিকটক অ্যাপটি নিষিদ্ধ করেছে।

    হুয়াওয়েসহ চীনা অনেক প্রযুক্তি সংস্থার সঙ্গে মার্কিন সংস্থাগুলোর ব্যবসার করার পথ বন্ধ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। একই সঙ্গে মার্কিন চিপ নির্মাতা কোম্পানিগুলোকে চীনের কাছে উন্নতর প্রযুক্তি বিক্রিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

    উন্নত কিরিন ৯০০০এস প্রসেসর দ্বারা চালিত মেট ৬০ প্রোর বাজারে আনার বিষয়টি এসব রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

    যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান গত সপ্তাহে বলেন, আইন লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা নির্ধারণে স্মার্টফোনটির ‘বৈশিষ্ট্য ও গঠন’ সম্পর্কে আরও তথ্য খতিয়ে দেখছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।