বিপিসি’র এসএওসিএল’র ১২৪ কোটি টাকার বকেয়া নিয়ে ঘাপলা: অভিযোগ এক পরিচালকের বিরুদ্ধে

    0
    140

    নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) অংশীদারি প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের(এসএওসিএল) ১২৪ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। দীর্ঘ দিন কৌশলে বিল না দিয়ে প্রায় সোয়া শ’ কোটি টাকার মাল নিয়ে গেছেন এই প্রতিষ্ঠানেরই একজন বেসরকারি পরিচালক। এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে।
    অভিযোগ, রয়েছে প্রতিষ্ঠানের বেসরকারি পরিচালক মিশু মিনহাজ প্রায় দেড় দশক ধরে এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি(এওসি) নামে একটি প্রতিষ্ঠানের এসএওসিএল’র সাথে ব্যবসা করছেন। এসএওসিএল এর হিসাব শাখার কিছু কর্মকর্তার সাথে যোগসাজস করে প্রতিবছর বিলের অনেক ফাইল লুকিয়ে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাত করেন। তিনি নিজে ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আবার ডিলার হওয়ার সুবাধে ওইসব কর্মকর্তা তার সাথে যোগসাজসে জড়িয়ে প্রতিষ্ঠানকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেন। অভিযুক্ত এসব কর্মকর্তাকে অন্য আর্থিক কেলেংকারির দায়ে চাকুরিচ্যুত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। এবিষয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। চিহ্নিত চার কর্মকর্তাকে চাকুরিচ্যুত করার পর বিপুল অংকের বিল না দেয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। বার্ষিক সাধারণ সভায় বিষয়টি উঠে আসে। প্রতিষ্ঠানের পাওনা পরিশোধের জন্য পরিচালক মিশু মিনহাজকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তিনি পাওনা পরিশোধ না করে নানাভাবে প্রতিষ্ঠানের ইমেজ ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছেন।
    এবিষয়ে কথা বলার জন্য মিশু মিনহাজকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইলে এসএমএস দেয়া হলে তার কোন উত্তরও তিনি দেননি।
    এদিকে, বিপুল পরিমাণ অর্থ আটকে যাওয়ার কারণে এসএওসিএল চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। এ ব্যাপারে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানী লিমিটেড কয়েকজন সদস্য দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ জমা দিয়েছে।
    জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শহীদুল আলম, এসব বিষয় নিয়ে জি এম সাহেবের সাথে কথা বলেন। তিনি ভাল বলতে পারবেন।
    প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌশলী শাহেদ বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে একটি চক্র প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িত ছিল। তার মধ্যে প্রতিষ্ঠানের চার কর্মকর্তা সরাসারি জড়িত। বিষয়টি টের পাওয়ার সাথে সাথে ওই চারকর্মকর্তাকে চাকুরিচ্যুত করে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে ৩২টি মামলা করা হয়েছে। মামলাগুলো চলমান আছে। বর্তমানে ১২৫ কোটি টাকা বেহাত হওয়ার যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার পেছনেও ওইসব কর্মকর্তার যোগ সাজস রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারাই মিশু মিনহাজকে একাজে সহযোগিতা করেছেন ফাইল লুকিয়ে। তাদের চাকুরিচ্যুতির পর ফাইলগুলো একে একে বেরিয়ে আসে।
    প্রতিষ্ঠানের আরেক পরিচালক জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল মনসুর ফোন রিসিভ করেননি।
    প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস ঃ ১৯৬৫ সালে তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানি নিবন্ধিত একটি প্রাইভেট কোম্পানি। যার এ ক্লাস শেয়ার হোল্ডার ছিলেন দি এশিয়াটিক ইন্ডাস্ট্রিজ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনহাজ উদ্দিন আহম্মদ। বি ক্লাস শেয়ার হোল্ডার ছিলেন ইএসএসও এর ব্যবস্থাপক এম এম বাকি। স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৫ সালে ইএসএসও আন্ডারটেকিং একুইজিশন এক্ট ১৯৭৫ এর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এএসএসওএর বি ক্লাস শেয়ার অধিগ্রহণ করে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অপর শেয়ারহোল্ডার মিনহাজ উদ্দিন আহম্মদের মৃত্যুর পর তার ছেলেরা উত্তরাধিকার সূত্রে অংশীদার হন। এই প্রতিষ্ঠানে সরকার এবং মিনহাজ উদ্দিন আহম্মদ অর্ধেক করে মালিকানা ভোগ করছেন। উভয়পক্ষের দুইজন করে পরিচালকের সমন্বয়ে কোম্পানির পরিচালনা পরিষদ গঠিত হয়ে ব্যবসা পরিচালিত হয়। বোর্ড সভার সিদ্ধান্তমতেই সব কার্যক্রম চলে। ধীরে ধীরে ব্যবসার পরিধি বাড়ে। সুত্র _পূর্বকোণ