বিমানের টিকিট পেতে আর ভোগান্তি হবে না: প্রধানমন্ত্রী

    0
    27

    বেহাল দশা কাটিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আধুনিকায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। ফলে টিকিট পেতে আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না যাত্রীদের। তবে যাত্রী পরিবহন সেবা আরও উন্নত করার পাশাপাশি উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণে বাড়াতে হবে স্বক্ষমতা।

    বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থাটির সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বক্তব্যে উঠে আসে এক সময়ের বিমানের বেহাল দশার চিত্র।

    ১৯৭২ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি। বিমানবাহিনীর একটি ডেকোটা উড়োজাহাজ ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল মধ্য দিয়ে শুরু হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বাণিজ্যিক যাত্রা। ৫০ বছরের পথচলায় আধুনিক বোয়িং সিরিজ, ড্যাশ টাইপসহ বিমানের বহরে আছে ২১টি উড়োজাহাজ।

    এসময় যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ডিজিটালাইজেশনের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পেসেঞ্জার সার্ভিস সিস্টেমকে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করে দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে অনলাইনে টিকিটিং, রিজারভেশন, বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর চেক-ইন সবকিছু অনলাইনে হবে। এটা আমাদের প্রবাসীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। আন্তর্জাতিকভাবে পৃথিবীর সবদেশে এই ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা এক্ষেত্রে একটু পিছিয়ে ছিলাম।  

    তিনি বলেন, আমি যতবার দেশের বাইরে গিয়েছি, সবসময় আমার একটা লক্ষ্য ছিল যে, আমাদের নিজেদের বিমান ব্যবহার করব। কিন্তু আমার নিজের অভিজ্ঞতা আছে তখন বিমানের কী বিধ্বস্ত অবস্থা ছিল। ৯৬ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি তখন উদ্যোগ নেই। যদিও তখন আর্থিকভাবে অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল, তার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছিলাম বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উন্নয়নে আরো কিছু উড়োজাহাজ বহরে যুক্ত হোক। আমাদের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো আরও চালু হোক, সেভাবে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। মাত্র পাঁচ বছর হাতে সময় সেভাবে কাজ করে যেতে পারিনি। তবুও আমরা কাজ করেছি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয়বার আমি যখন সরকারে আসি ২০০৮ নির্বাচনে জয়ী হয়ে, ২০০৯-এ আমরা লক্ষ্য করি বাংলাদেশ বিমান নিউইয়র্ক, ব্রাসেলস, প্যারিস, ফ্রাঙ্কফুর্ট, মুম্বাই, নারিতা এবং ইয়াঙ্গুন রুটে যে ফ্লাইট চলাচল করতো সেগুলো সব লোকসান দেয় এবং একে একে সব বন্ধই করে দিতে হয়। আওয়ামী লীগ সরকারে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই যে জরাজীর্ণ একটা বিমান, এমনকি একটা গানও শোনা যেত না, যদি আমি জানলার সিটে বসতাম তখন তো ঝরঝর করে পানি পড়ত। কোনোমতে কাপড় দিয়ে সে পানি বন্ধ করা হত। এমনই আমাদের বিমানের দুর্দশা ছিল। বরং আমি আমাদের পাইলটদের সবসময় ধন্যবাদ জানাতাম যে এ ধরনের অবস্থায় সাহস করে তারা যে বিমান চালাচ্ছে এটাই একটা বড় জিনিস ছিল।

    তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নেই। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে বর্তমানে ৪টি বৃহৎ পরিসরের বোয়িং-৭৭৭-৩০০-ইআর, চতুর্থ প্রজন্মের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত ৪টি ৭৮৭-৮ ও ২টি ৭৮৭-৯ সহ মোট ৬টি ড্রিমলাইনার, ৬টি ৭৩৭-৮০০ এবং ৫টি ড্যাশ-৮-৪০০ উড়োজাহাজ রয়েছে। এই ২১টি উড়োজাহাজের মধ্যে ১৮টি উড়োজাহাজই বিমানের নিজস্ব মালিকানাধীন। অনেকগুলো আমাদের সময়েই সংগ্রহ বা ক্রয় করা। 

    বিমানের আয় বাড়াতে কার্গো সেবা চালুর পরামর্শ দেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, মালদ্বীপে ইতিমধ্যে বেসরকারি খাত থেকে বিমান যাওয়া শুরু করেছে। আমি মনে করি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সব জায়গায় লাভ-লোকসান খতিয়ে দেখার দরকার নেই। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা এবং কার্গো পরিবহন একান্তভাবে দরকার।

    এরআগে সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।