বিশ্বের যেসব দেশে ১৪ এপ্রিল বর্ষবরণ উৎসব হয় 

    0
    33

    এপ্রিলের ১৪ তারিখ বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দিন ‘পহেলা বৈশাখ’। এদিনটি কেবল বাংলাদেশই নয়, বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছেও দিনটি বিশেষ উদযাপনের।

    মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের দুইটি বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদের পর সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ পহেলা বৈশাখ উৎসবটি উদযাপন করেন।

    তবে এ উৎসব শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের কয়েকটি রাজ্য, মিয়ানমার, নেপাল, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনামে ১৪ এপ্রিলে নতুন বর্ষবরণের উৎসব পালন করা হয়।

    বাংলাদেশ:
    মুঘল সম্রাট আকবর খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য তার সভার জ্যোতির্বিদ আমির ফতুল্লা শিরাজীর সহযোগিতায় ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ‘তারিখ-এ-এলাহি’ নামে নতুন একটি বছর গণনা পদ্ধতি চালু করেন।

    এটি কৃষকদের কাছে ‘ফসলি সন’ নামে পরিচিত হয়, যা পরে ‘বাংলা সন’ বা ‘বঙ্গাব্দ’ নামে প্রচলিত হয়ে ওঠে। বাংলা সন শূন্য থেকে শুরু হয়নি, যে বছর বাংলা সন প্রবর্তন করা হয়, সে বছর হিজরি সন ছিল ৯২৩ হিজরি। সে অনুযায়ী সম্রাটের নির্দেশে প্রবর্তনের বছরই ৯২৩ বছর বয়স নিয়ে যাত্রা শুরু হয় বাংলা সনের। 

    ইতিহাসবিদদের হিসাব অনুযায়ী ১৫৫৬ সাল থেকে বাংলা সন প্রবর্তন করা হয়।

    ভারত: 
    ভারতের কয়েকটি রাজ্যে বৈশাখ মাসের প্রথম দিন নববর্ষ উদযাপন করা হয়। হিন্দু সৌর বছরের প্রথম দিন আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, মনিপুর, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব, তামিল নাড়ু এবং ত্রিপুরার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।

    মিয়ানমার: 
    মিয়ানমারের নববর্ষকে স্থানীয়ভাবে থিংইয়ান নামে ডাকা হয়। বার্মিজ ভাষায় এর অর্থ ‘পরিবর্তন’ বা ‘এক জায়গা থেকে অন্যত্র স্থানান্তর’। মিয়ানমারে এ দিনটিতে হয় থিংইয়ান উৎসব, যেখানে পানি উৎসব হয় বৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকায়। নববর্ষের চারদিন আগে থেকে পানি উৎসব শুরু হয়, চলে নববর্ষের দিন পর্যন্ত। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো পানি উৎসবের একটি।

    থাইল্যান্ড:
    থাইল্যান্ডের দিনটি সংক্রান উৎসব নামে পরিচিত। সংক্রান শব্দটি সংস্কৃত ভাষার শব্দ সংক্রান্তি থেকে এসেছে। এ দিনে পানি উৎসবে মেতে ওঠে পুরো দেশ। থাইল্যান্ডে এপ্রিলের ১৩ তারিখে শুরু হয়ে এ উৎসব চলে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এ সময়ে দেশটির সাধারণ ছুটি থাকে। নববর্ষে থাইল্যান্ডে সবচেয়ে বড় আয়োজন থাকে পানি উৎসব।

    নেপাল:
    নেপালের আনুষ্ঠানিক বর্ষ পঞ্জিকা বিক্রম সাম্বাতের প্রথম দিন ১৪ এপ্রিল। এ দিনে নেপালে নববর্ষ উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকে।এ দিনে বৈশাখ উৎসব নামে সার্বজনীন এক উৎসব হয় দেশজুড়ে। তবে নেপালে চন্দ্রবর্ষের প্রথম দিন, যার নাম সোনাম লহসারও উদযাপন করা হয়, সেদিনও সরকারি ছুটি থাকে দেশটিতে।

    সিনহালা নববর্ষ:
    সিনহালা নববর্ষকে স্থানীয়ভাবে আলুথ আবুরুদ্ধাও বলা হয়। মূলত সিনহালিজদের উৎসব হলেও দেশটির সকল মানুষ উদযাপনে সামিল হন। দিনটিতে শ্রীলঙ্কায় সরকারি ছুটি থাকে। শ্রীলংকার এই নববর্ষ ১৪ই এপ্রিল পালন করা হয়। তবে উৎসব চলে এক সপ্তাহ ধরে।

    লাওস:
    লাওসেও সৌর পঞ্জিকা অনুযায়ী বৈশাখের প্রথম দিনটি পালন করা হয়। স্থানীয়ভাবে এর নাম সংক্রান বা পি-মেই, যার মানে নতুন সংক্রান্তি বা নতুন বছর। দেশটিতে তিন দিন ধরে চলে উৎসব আনুষ্ঠানিকতা।

    সূত্র: বিবিসি বাংলা