ভারতের নিষেধাজ্ঞা বাধা নয়, আজই টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ

    0
    7

    অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রফতানিতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। কয়েক মাস এ নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে ভারত থেকে ভ্যাকসিন কিনতে অর্থ পরিশোধ করছে বাংলাদেশ। দু-একদিনের মধ্যেই ১২০ মিলিয়ন ডলার বা এক হাজার ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে।সোমবার (৪ জানুয়ারি) এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।তিনি বলেন, সেরামের ভ্যাকসিনের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। এ ছাড়া তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। আমরা সব জায়গা থেকে আশ্বাস পেয়েছি। যেহেতু চুক্তি হয়েছে আমরা ভ্যাকসিন পাব।মন্ত্রী বলেন, ভারতের কাছ থেকে করোনার ভ্যাকসিন পেতে তাদের সঙ্গে আমাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে এবং আজকে যে আলোচনা হয়েছে তাতে আমরা এখনো আশাবাদী। আশা করছি, এ চুক্তি ব্যাহত হবে না।  এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আপনারা যা জেনেছেন আমরাও তা জেনেছি। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না, আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে, থাকবে। জাহিদ মালেক বলেন, ভারতে অনুমোদিত এই ভ্যাকসিন এখন ডব্লিউএইচওর কাছে আবেদন করবে, আবেদনের প্রেক্ষিতে তারা অনুমোদন পাবে। এরপর তারা আমাদেরকে জানাবে আমরা কবে পাব। চুক্তির প্রতি আমাদের আস্থা আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তির প্রতি আমাদের আস্থা আছে। এ বিষয়ে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত উনারা কেউ নেগেটিভ বলেনি। ভারত ছাড়াও ভ্যাকসিন পেতে বিকল্প কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকের সঙ্গেই কথা হচ্ছে। এর মধ্যে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা তাদের ট্রায়ালে আছে। অনুমোদন হলে এ বিষয়ে আমরা সামনের দিকে আগাব। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য সচিব জানান, ভারতীয় দূতাবাস থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে যে, ভারত সরকার ভ্যাকসিন নিষিদ্ধ করেছে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে সরকারি পর্যায়ে। এখানে কোনো বাধা নেই। এ জন্য চুক্তি অনুযায়ী অর্ধেক অর্থ (১২০ মিলিয়ন ডলার) আজই (সোমবার) পরিশোধ হয়ে যাবে। মন্ত্রী ইতিমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন।এর আগে রোববার (৩ জানুয়ারি) মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা বলেন, রোববার ভারতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা তাদের টিকার জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। তবে শর্ত হচ্ছে ভারতের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকা রফতানি করা যাবে না।‘আমরা এ মুহূর্তে শুধু ভারত সরকারকে টিকা সরবরাহ করতে পারব। টিকা মজুত না করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ পুনাওয়ালা আরও বলেন, ভারতের অন্তভ্যরীণ বাজারে টিকা বিক্রি করা থেকেও সেরামকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।দিনের শুরুতে সেরাম ইনস্টিটিউট এক সভায় জানায়, যেসব দেশ তাদের টিকা নিতে আগ্রহী, তাদের দেওয়ার আগে দুই মাস ভারতের তাৎক্ষণিকভাবে কী পরিমাণ টিকার প্রয়োজন, তা উৎপাদনে মনোনিবেশ করতে চায় তারা।রোববার ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল (ডিসিজিআই) জরুরি অনুমোদনের বিষয়টি ঘোষণা করেন। এর মধ্য দিয়ে করোনা ভাইরাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে টিকা প্রয়োগের দ্বার উন্মোচিত হয়।