মাদারীপুরে যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ১৬ ঘটনায় ইমাদ পরিবহনের ফিটনেস সনদ ছিল না

    0
    6

    মাদারীপুরের শিবচরে দুর্ঘটনাকবলিত ইমাদ পরিবহণের বাসটিতে কোনো ফিটনেস ছিল না। খুলনা ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী বাসটি কীভাবে বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের নজরদারি এড়াল তা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরও বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। এ কারণে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বাসটির রেজিস্ট্রেশন প্রাথমিকভাবে স্থগিত করেছিল।

    অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুর্ঘটনাকবলিত ইমাদ পরিবহণের গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৩৩৪৮। ভারতের অশোক লে ল্যান্ড কোম্পানির গাড়িটি ২০১৭ সালে তৈরি। ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি এটি রেজিস্ট্রেশন করা। এর মালিকানায় রয়েছে-সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (পান্থপথ শাখা) এবং ইমাদ পরিবহণ প্রাইভেট লিমিটেড। ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ইফাদ অটোস লিমিটেড, ২১ রাজউক এভিনিউ এবং আরেকটি ঠিকানা গোপালগঞ্জের আলিয়া মাদ্রাসা রোড।

    বিআরটিএ সূত্র জানায়, বাসটির ফিটনেস ছিল না। ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি বাসটির ফিটনেসের জন্য আবেদন করা হয় এবং এ বছরের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদ ছিল। গত বছরের নভেম্বরে বাসটি গোপালগঞ্জে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ কারণে বিআরটিএ’র ওয়েবসাইটে বাসটির রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করে রেখেছিল। রোববার দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অভিযোগ, বাসটি প্রথম থেকে বেপরোয়া গতিতে চলছিল। এজন্য বাসের চালককে কয়েকবার সতর্কও করা হয়েছিল। সম্প্রতি ইমাদ পরিবহণে বাসচালক জাহিদ শেখ যোগ দেন বলে জানা গেছে।

    সূত্র জানায়, খুলনা সার্কেলে প্রায় ১৭ হাজার যানবাহনের মধ্যে ৩ হাজার ৩০০টির ফিটনেস নেই। এ তথ্য ফেব্রুয়ারি মাসের। এ ছাড়া ১৮৫টি অ্যাম্বুলেন্সেরও ফিটনেস নেই। শিবচরে দুর্ঘটনাকবলিত ইমাদ পরিবহণের বাসটি দুই মাস আগে ফিটনেসের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। অথচ যানবাহনটি প্রতিদিন খুলনা মহানগরী ও জেলায় চলাচল করত। অথচ নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও বিষয়টি তাদের নজরদারিতে আসেনি।

    বিআরটিএর খুলনার সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ রোববার যুগান্তরকে জানান, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও বিআরটিএ সমন্বয়ে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। ফিটনেসবিহীন যানের ফিটনেস নবায়ন করার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন, মাইকিং ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। এমনকি ফিটনেস খেলাপি যানের মালিকদের কাছে তাদের যানবাহন নবায়ন করার জন্য রেজিস্ট্রিযোগে চিঠি পাঠানো হয়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ফিটনেস খেলাপিদের তালিকা পাঠানো হয়।

    খুলনা ট্রাফিক পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, কেএমপি কমিশনারের নির্দেশে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিষয়ে আমাদের বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে। নগরী ও হাইওয়েতে কোনোভাবেই যেন ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল না করে সেজন্য আমরা সক্রিয় আছি।

    জানা গেছে, আইন অনুযায়ী ফিটনেসবিহীন বা মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলাচলে অনধিক ৬ মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান থাকলেও তা তেমন কার্যকর করা হয় না।