রোজার নিয়ত ও সেহরির মাসয়ালা 

    0
    29

    বছর ঘুরে অফুরন্ত রহমত নিয়ে ফিরে এসেছে মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। 

    আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন: (তরজমা) হে মুমিন সকল! তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপরও ফরজ করা হয়েছিল।  যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।  (সূরা বাকারা-১৮৩)

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে, (অন্য বর্ণনায়) ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় তারাবির নামাজ পড়ে, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বুখারি শরিফ: হাদিস নং ১৯০১)

    রোজার নিয়ত

    রমজানের রোজার জন্য সুবহে সাদিকের পূর্বে মনে মনে এই নিয়ত করবে যে, ‘আমি আজ রোজা রাখবো’ অথবা দিনে আনুমানিক ১১টার পূর্বে মনে মনে নিয়ত করবে যে, আমি আজ রোযা রাখলাম। মুখে নিয়ত করা জরুরি নয়, বরং মুস্তাহাব। (রদ্দুল মুহতার: ২/৩৭৭)

    রোজার নিয়তের ক্ষেত্রে আরবি ভালোভাবে বলতে পারলে ও বুঝলে আরবিতে নিয়ত করা যাবে। অন্যথায় বাংলায় নিয়ত করাই ভালো।

    রোজার নিয়ত: রোজা সহিহ হওয়ার জন্য নিয়ত করা শর্ত। নিয়ত হলো, অন্তর দিয়ে কোনো কাজের সংকল্প করা। 


    রোজার ক্ষেত্রে এরূপ সংকল্প করা যে আমি রোজা রাখছি। এতটুকুই যথেষ্ট তবে মুখে উচ্চারণ করা মুস্তাহাব। প্রত্যেক দিনের রোজার জন্য নিয়ত করা আবশ্যক।

    শায়েখ নাজমুদ্দিন নসফি রহমতুল্লাহি আলাইহির মতে রমজানে সেহরি খাওয়ার দ্বারা নিয়ত আদায় হয়ে যায়। অন্য রোজার ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য হবে। 

    আরবিতে নিয়ত করা জরুরি নয়। তবে কেউ যদি আরবি শব্দে নিয়ত করতে চায় তাহলে বলবে- ‘নাওয়াইতু আন আছূমা গাদাম মিন শাহরি রামাদানা’ অর্থাৎ আমি রমজান মাসের আগামী দিনের রোজা রাখার নিয়ত করছি। 

    কেউ যদি বলে, আল্লাহ চাহে তো আগামীকাল রোজা রাখব। তবুও তার নিয়ত শুদ্ধ হবে। 

    অনেকে বলেন, সমাজে যে আরবি নিয়ত প্রচলিত আছে তা বলতে হয়, নইলে কমপক্ষে মুখে এতটুকু বলতে হয় যে, আমি আগামীকাল রোজা রাখার নিয়ত করছি।

    এমন ধারণা সঠিক নয়। কারণ রোজার জন্য মৌখিক নিয়ত জরুরি নয়; বরং অন্তরে রোজার সংকল্প করাই যথেষ্ট। এমনকি রোজার উদ্দেশ্যে সাহরি খেলেই রোজার নিয়ত হয়ে যায়।

    সুতরাং এ কথা ভাবার কোনো সুযোগ নেই যে, মুখে রোজার নিয়ত না করলে রোজা হবে না।

    রোজার সময়: রোজার সময় হলো সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। কাজেই সুবহে সাদিক না হওয়া পর্যন্ত পানাহার স্ত্রী সহবাস সবকিছু করা জায়েয। অনুরূপ সূর্যাস্তের পরও উপরোক্ত কাজগুলো জায়েয। 

    শেষরাতে সেহরি খাওয়া এবং রোজার নিয়ত করে নেয়ার পর রাত থাকা সত্ত্বেও কিছু খাওয়া দাওয়া বা স্ত্রী সহবাস করা না জায়েয নয়। তবে সুবহে সাদিক হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ হলে এ কাজগুলো করা উচিত নয়। অবশ্য এ অবস্থায় পানাহার করলে রোজা শুদ্ধ হবে। 

    কিন্তু যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, সুবহে সাদিকের পরে সেহরি খাওয়া হয়েছে তবে সেই রোজার কাজা করতে হবে। সূর্যাস্ত হয়ে গেছে মনে করে ইফতার করার পর যদি দেখা যায় যে মূলত সূর্যাস্ত হয়নি এ অবস্থায় বাকি সময়টুকু রোজা অবস্থায় কাটাতে হবে এবং ওই রোজার কাজা করতে হবে।

    সাহরি ও ইফতার

    রোজাদারের জন্য সাহরি খাওয়া ও ইফতার করা সুন্নাত। বিশেষ কিছু না পেলে সামান্য খাদ্য বা কেবল পানি পান করলেও সাহরির সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।