সীতাকুণ্ডের ঘটনায় ডিপো মালিকপক্ষের অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি 

    0
    4

    চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় ডিপো কর্তৃপক্ষ ও তদারকি সংস্থার অবহেলা দায়ী বলে জানিয়েছে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটি।

    এক মাস তদন্ত শেষে বুধবার (৬ জুলাই) দেয়া ১৯ পৃষ্ঠার রিপোর্টটি চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাতে ডিপো ব্যবস্থাপনায় আইন সংশোধনসহ ২০ দফা সুপারিশ করে কমিটি। গত ৫ জুন ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে এই রিপোর্ট জমা দেয়।

    এদিকে গত ৪ জুন সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড আর বিস্ফোরণের ঘটনায় জন্ম দেয় নানা প্রশ্নের। বিশেষ করে ডিপোটিতে রাসায়নিক পদার্থ মজুত আর অগ্নি নিরাপত্তায় ঘাটতি ও ত্রুটির বিষয়টি এখন আলোচনার শীর্ষে।

    বিএম ডিপোর ব্যবস্থাপনা আর সার্বিক নিরাপত্তায় গলদের বিষয়টি ধরা পড়েছিল ঘটনার ৬ মাস আগে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার তত্ত্বাবধানে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটির পরিদর্শন প্রতিবেদনে উঠে আসে ব্যাপক অনিয়ম।

    বিভিন্ন ডিপো নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনটির ১০ পৃষ্ঠাজুড়ে আছে বিএম ডিপো সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৭টি বিষয় খতিয়ে দেখে পরিদর্শক দল। যাচাই করা বিষয়গুলোর অন্যতম অগ্নি, বৈদ্যুতিক এবং বিস্ফোরণজনিত নিরাপত্তা আর অবকাঠামো। সবমিলে ১০২ নম্বরের মধ্যে বিএম ডিপোর প্রাপ্ত নম্বর ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

    প্রতিবেদনে উঠে আসে, ১১টি দপ্তর থেকে লাইসেন্স বা ছাড়পত্র নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও নিয়েছে কেবল ৬টি থেকে। বৈদ্যুতিক নিরাপত্তায় অনুসরণ হয়নি ৭টি নির্দেশনা। আর যান্ত্রিক নিরাপত্তায় একটি। অবকাঠামোর ক্ষেত্রে মানা হয়নি ২টি ধারা। অগ্নি নিরাপত্তায় উপেক্ষিত ১৭টি বিষয়। তবে বিস্ফোরণজনিত নিরাপত্তায় ৪টি বিষয় খতিয়ে দেখা হলেও বিবেচনায় আসেনি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড।

    সবমিলে গত মার্চে জমা দেয়া প্রতিবেদনে বিএম ডিপোতে ১৭টি ক্ষেত্রে আইন ও বিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ মেলে। সম্ভাব্য দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রতিটি ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে সুপারিশও করে বিডা। তবে হয়নি তার বাস্তবায়ন। যার প্রমাণ পেতে শুরু করেছেন ডিপোটিতে দুর্ঘটনার তদন্তকারীরাও। জানালেন, বিএম ডিপোর দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশন গঠিত তদন্ত কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

    ডিপোটির এসব ত্রুটি-অনিয়ম নিরসনে সময়মতো ব্যবস্থা নেয়া হলে, হয়ত এড়ানো যেত ভয়াবহ ঘটনাটি, বলছেন রসায়ন ও পরিবেশ গবেষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী।