সেই নবজাতকের ডান হাত ভালো হতে লাগবে ২ সপ্তাহ  

    0
    10

    ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকটি সুস্থ আছে। তাকে নগরীর চরপাড়া এলাকার লাবীব হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুটির আঘাতপ্রাপ্ত ডান হাত পুরোপুরি ঠিক হতে দুই সপ্তাহ লাগতে পারে।

    আর ১০ জনের কথা ধরলে এখন মায়ের কোলে থাকার কথা ছিল শিশুটির। কিন্তু বেপরোয়া একটি ট্রাক সেই সুযোগ বঞ্চিত করেছে তাকে। পৃথিবীতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বাবা, মা ও বোনকে হারিয়েছে ফুটফুটে এই নবজাতক। বেঁচে গেছে অলৌকিকভাবেই।

    রাস্তা থেকে এখন শিশুটির ঠাঁই হাসপাতালে। অন্য প্রসূতি মায়ের বুকের দুধ দেয়া হচ্ছে তাকে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, জন্মের সময় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে তার ডান হাত। পুরোপুরি সুস্থ হতে দুই সপ্তাহ লাগতে পারে।

    হাসপাতাল থেকে চ্যানেল24 অনলাইনকে প্রতিনিধি সুলতান মাহমুদ কনিক জানিয়েছেন, গতকালকে ঘটনার পর থেকে প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে, বাচ্চাটি এখন সুস্থ আছে।

    আরও পড়ুন: আরও কমল স্বর্ণের দাম

    তিনি বলেন, ডাক্তাররা জানিয়েছেন-শিশুটির ডান হাতের যে অংশটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, সেটি ছাড়া অন্য কোনও সমস্যা নেই। অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়ার পর থেকে অনেকে তার দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এসেছেন।

    লাবীব হাসপাতালের পরিচালক মো. শাহজাহানের তত্ত্বাবধানে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। তিনি বলেন, ডাক্তার সাহেব মনিটরিং করে একটু আগেও আমাকে জানিয়েছেন, বাচ্চা সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। তার ডান হাতে যে ফ্র্যাকচার আছে তা ভালো হতে ১০ থেকে ১৫ দিন লাগবে। এছাড়া নবজাতকের খাবারদাবার, প্রসাব, পায়খানা-সব স্বাভাবিক আছে।

    মো. শাহজাহান বলেন, পাশের কেবিনেই এক নারীর বাচ্চা হয়েছে। তিনিই অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুটিকে বুকের দুধ পান করাচ্ছেন।

    এর আগে শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেলে ত্রিশালের কোর্টভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের মেয়ে সানজিদা (৬)।

    প্রসবের নির্ধারিত সময় পার হওয়ায় আলট্রাসনোগ্রাম করাতে স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছিলেন তারা। সেখান থেকে ফেরার পথে ট্রাকচাপায় ঘটনাস্থলেই ওই তিনজন নিহত হন।

    আরও পড়ল: লিটারে সয়াবিন তেলের দাম কমল ১৪ টাকা

    ওই সময় মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় ফুটফুটে নবজাতক কন্যা। পরে পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা।

    সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতকটিকে ময়মনসিংহ সদর সিবিএমসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে এক্সরে-তে দেখা যায়, তার ডান হাতের দুটি হাড় ভেঙে গেছে।

    এই নবজাতক ছাড়া নিহত জাহাঙ্গীর-রত্না দম্পতির এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ে জান্নাত (১০) চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তবে ছেলে এবাদতের (৭) এখনও স্কুলে হাতেখড়ি হয়নি।